আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এতে বিপাকে পড়েছেন ভর্তিচ্ছুরা। অপেক্ষমাণ তালিকায় থেকেও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছেন না তারা। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলনও করছেন শিক্ষার্থীরা। শূণ্য আসন পূরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাত্মক শ্রেণী ও ডিগ্রি পাস কোর্সে আসন ফাঁকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ হাজার। তারপরও সেখানে আর নতুন করে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আসন ফাঁকা ছিলো ২৪ হাজার ৬৯৪টি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে গত অক্টোবরে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, আসন খালি থাকলেও নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই। কারণ কিছুদিন পরই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরু হবে। এখন শিক্ষার্থী ভর্তি করালে তাদের প্রিপারেশন নেয়ার সুযোগ থাকবে না। আবার এদের জন্য অপেক্ষা করলে সেশনজটও বাড়তে পারে। সেইসঙ্গে নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রমও শুরু করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০টির মতো আসন ফাঁকা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আর শিক্ষার্থী ভর্তি করাবেন না। নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সর্বশেষ তথ্যমতে, এবছর ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ মোট তিন ইউনিটে ৪ হাজার ১৭৩ আসন সংরক্ষিত ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘সি’ ইউনিটে বর্তমানে কোন আসন ফাঁকা নেই। তবে ‘বি’ ইউনিটে ১০টি এবং ‘এ’ ইউনিটে প্রায় ৮০টিসহ ৯০টির মতো আসন ফাঁকা রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে ২১ ডিসেম্বর।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক বাবুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই কম বেশি আসন ফাঁকা থাকে। ভর্তি বাতিল ও মাইগ্রেশনের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ‘ক’ ও ‘ঘ’ ইউনিটে আসন ফাঁকা থাকার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ভর্তি বাতিল ও মাইগ্রেশনের কারণে এই দুই ইউনিটে কিছু আসন ফাঁকা রয়েছে। শূণ্য আসন পূরণে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলনও করছেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি এক শিক্ষার্থী আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন। তবে ‘ক’ ইউনিটভুক্ত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, এই ইউনিটে কোন আসন ফাঁকা নেই। শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস শুরু হয়েছে। আসন ফাঁকা থাকলে অবশ্যই ভর্তি নেয়া হতো।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও আসন ফাঁকা থাকার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, অল্প কিছু আসন ফাঁকা থাকলেও তার জন্য মেধাতালিকা বা আবার সাক্ষাৎকার ডাকার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ৪৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে শ্রেণীতে আসন ফাঁকা ছিলো ছয় হাজার ৪৫১টি।