শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘জাতির পিতার কর্মমুখী, বিজ্ঞাননির্ভর, প্রায়োগিক শিক্ষার যে দর্শন ছিল, তার থেকে আমরা সরে এসেছি। আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার চাহিদায় তরুণ জনশক্তির যে দক্ষতার প্রয়োজন, তা আমরা দেখাতে পারছি না। ফলে কর্মসংস্থান, চাকরি-বাকরিতে তারা পিছিয়ে আছে।’
ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগ। সোমবার (৭ মার্চ) রাতে এ প্রতিযোগিতায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যার রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে যে গতিতে অর্থনীতি চলছে, সে অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির সঙ্গে বুঝে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। আমরা কৃষি থেকে শিল্পায়নের দিকে যাচ্ছি। এতে ভূমিকা রাখতে মাল্টিস্কিলড হওয়ার বিকল্প নেই।’
প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ সাকিব সাদমান প্রান্ত। দ্বিতীয় হয়েছেন ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের খ ম নাজিব হায়দার। আর তৃতীয় হয়েছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপন মিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘বাংলার দুর্বলচিত্তের মানুষগুলোকে একটিমাত্র ভাষণ দিয়ে মাথা উঁচু করে দাড়াবার, জীবন দেওয়ার মতো আবেগ, উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূলমন্ত্র ছিল ৭ মার্চের ভাষণ।
তিনি বলেন, ‘যখনই কোনো বিদেশী শক্তি এসে আমাদের ভূখণ্ড দখল করেছে, আমরা তাদের খাজনা দিয়ে এসেছি। তাদের চাবুকের আঘাতে আমরা রক্তাক্ত হয়েছি, তবুও তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় জুতো পরে যাইনি। তাদেরকে ভক্তি, শ্রদ্ধার এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছি নিজের মুখে খাবার তোলার আগে খাজনা দিয়ে এসেছি। সেখানে এই দুর্বলচিত্তের মানুষগুলোকে একটিমাত্র ভাষণ দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার, জীবন দেওয়ার মত আবেগ, উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার মূলমন্ত্র। সেই তো ৭ মার্চের ভাষণ।
বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে দুটি বিষয় তুলে ধরেছিলেন। একটি হলো স্বাধীনতা, অপরটি হলো মুক্তি। ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তবে মুক্তি পেয়েছি কি না এটি নিয়ে অনেক বক্তব্য এসেছে।
তিনি আরো বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট বর্বরতম হত্যা সংঘটিত না হতো, তাহলে আমরা মুক্তিও পেতাম। তবে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পেয়েছি। যার হাত দিয়ে দেশের মানুষের মুক্তি ক্রমাগত অর্জিত হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের সভাপতি আন নাহিয়ান খান জয় বলেন, ১৯৭১ সালে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু প্রায় ১৯ মিনিটের যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার মাধ্যমে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতার বার্তা। তখনই মানুষ বুঝতে পেরেছিল, পাকিস্তানের প্রেতাত্মাদের হটিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম দেশকে রক্ষা করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীবুর রহমান সজীবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।