করোনাভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে স্বাভাবিক রুটিনে ফিরছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। চলতি মাসের মাঝামাঝি নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হচ্ছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এ বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারিভাবে ঘোষণা আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক স্তরে চলতি মাসের মাঝামাঝি পুরোদমে ক্লাস শুরু হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘শ্রেণিকক্ষে যারা কোনো কারণে আসতে পারছে না, তারা অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমের আওতায় থাকবে। যেখানে মনে হবে দরকার আছে, সেখানেই অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। আর গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে চারটি এবং তিনটি বিষয়ে দশম শ্রেণিতে ক্লাস হচ্ছে। অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে দুদিন তিন বিষয়ে আর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে একদিন তিন বিষয়ে ক্লাস চলছে।
এ ছাড়া প্রায় দেড় মাস বন্ধের পর গত বুধবার থেকে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ক্লাস শুরু হয়। আপাতত প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস হবে সপ্তাহে ছয় দিন। তবে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধই থাকছে। করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আরও পরে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে সরকার।
এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পুরোদমে ক্লাস শুরুর ঘোষণা আসতে পারে আগামী সপ্তাহে। যদিও করোনার কারণে দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে গেছে।
তবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সেজন্য দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরাতে চান শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
মাউশি মহাপরিচালক বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি আমরা। অনুমোদন পেলেই সামনের সপ্তাহে স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেওয়া যাবে বলে আশা করছি। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই করোনার টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। যারা বাকি আছে, তারাও টিকার আওতায় আসবে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে এক কোটি পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী।’
এর আগে গত বুধবার একাদশ শ্রেণির নবীনবরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর চলতি ও আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।