আসন্ন শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমছে এক হাজারের বেশি আসন। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, আসন কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পথকে সংকুচিত করেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ও বিভাগগুলোর সক্ষমতা নিশ্চিতকরণে আসন পুর্ননির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সবারই একটা স্বপ্ন থাকে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করবে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি পরীক্ষায় আসন কমানো মূল উদ্দেশ্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যা যেটি আমরা ভর্তি করিয়েছি সেটির সংখ্যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্তে হয়েছে। প্রায়শ সে সিদ্ধান্তগুলো থাকতো স্বতঃস্ফূর্ত। স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক সময় পরিকল্পনা ও যৌক্তিকতার ঘাটতি থাকে। সেই যৌক্তিকীকরণটি প্রয়োজন হয়ে পড়লো।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হয় তার ক্লাসের পারফরমেন্স ও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। অন্য কোনো উপায়ে এখানে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার সুযোগ নেই। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে শিক্ষকরা শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের কাছে মনে হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের শতভাগ দিতে পারছেন না। কারণ বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলো তার সক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত শ্রেণী কক্ষের সুবিধা, ল্যাব সুবিধা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ভিসি বলেন, আমাদের শিক্ষকরা এ সমস্যার কথা সারা বছরই বলেন। ভর্তির সময়ে আসলে এই সমস্যা আরো ভালোভাবে বুঝা যায়। তাই এবার আমরা বিষয়টি যৌক্তিকীকরণ করার চেষ্টা করেছি। বিভাগ, ইনস্টিটিউটগুলো পর্যালোচনা করেছে। ডিনরা পর্যালোচনা করেছেন। পরে একাডেমিক কাউন্সিল ও সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় বিষয়টি উঠেছে। সব দিক বিবেচনা করে আসন পুর্ননির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৩টি অনুষদের অধীন ৮৩টি বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ১৩টি বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট। সর্বশেষ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ৭ হাজার ১৪৮ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব বিভাগ-ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। নতুন সিদ্ধান্তের কারণে এই শিক্ষাবর্ষে ছয় হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তির সুযোগ পাবেন।