ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য আব্দুল হামিদ। গতকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিন ঘণ্টা ও উপাচার্যের সঙ্গে আধা ঘণ্টা বৈঠক করে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। তবে বৈঠকের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি শিক্ষার্থীরা। আজ সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন তারা।
১৩ জানুয়ারি গভীর রাতে সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রীরা। পরে সেই আন্দোলনে যোগ দেন ছাত্ররাও। ছাত্রলীগ হামলা ও পুলিশের অ্যাকশনের পরে আন্দোলন ভিসির পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন ভিসি অধ্যাপক ফরিদ। হল খালি করে দেয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে ১৭ জানুয়ারি ভিসির বাসার সামনে অবস্থায় নেয় শিক্ষার্থীরা। ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন তারা। এসময় অবরুদ্ধ ছিলেন ভিসি। অবরোধ তুলে নিলেও ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাসা থেকে বের হননি ভিসি। দাবি আদায়ে অনশন করেন ২৮ শিক্ষার্থী। সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দিয়েও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে একচুলও নড়ানো যায়নি। পরে সরকারের আশ্বাস পেয়ে ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক। ওইদিন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়া হবে বলে সরকারের আশ্বাসের কথা জানান ড. জাফর ইকবাল।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তাদের সব দাবি যৌক্তিক মনে হয়েছে। কিছু প্রস্তাবনাও ছিলো। কিছু দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। বাকিগুলাও আস্তে আস্তে মেনে নেয়া হবে। তবে ভিসির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। এ বিষয়ে আমরা তাকে অবহিত করবো। তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।
বৈঠকের পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী জানান, তারা শিক্ষামন্ত্রীকে সবকিছুই পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেন নি। যার কারণে তাদের মধ্যে কিছুটা দ্বিধা কাজ করছে। আজ বিকালে সভা করে সব বিষয়ে আবারও আলোচনা করা হবে। সন্ধ্যায় প্রেস বিফ্রিং করা হবে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কার্যালয়ে যান সরকারের একটি বিশেষ সংস্থার গাড়িতে। ওই সংস্থার সদস্যরা তাকে পুরো সময় ঘিরে রেখেছিলেন। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাীর্থীরা। তারা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। ভিসি বিষয়টিকে এমনভাবে উপস্থাপন করছেন যেন তার জীবন হুমকির মুখে। একটা সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে তাকে কার্যালয়ে আসতে হচ্ছে।
বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী ভিসি ফরিদকে পরবর্তী নির্দেশনা আসা পর্যন্ত ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।