The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪

আসন কমলেও কিছু বিভাগে বাড়বে

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা প্রায় ১ হাজার কমিয়ে ৬ হাজারে নামিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই লক্ষ্যে বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলোর মতামত নিয়ে একটি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটি। সেখানে ৪৪টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে আসন কমানো এবং ১৫টিতে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনার পর আসন কমানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে সিন্ডিকেটে। কর্তৃপক্ষ বলছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে বেকারত্ব কমিয়ে আনার জন্য আসন কমানোর উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন ছিল ৭ হাজার ১২৫টি। সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে আসনসংখ্যা হবে ৬ হাজার ১১০। অর্থাৎ ১ হাজার ১৫টি আসন কমবে।

সুপারিশ অনুযায়ী, কলা অনুষদে ৫১৫টি কমে আসনসংখ্যা ১ হাজার ৩৬০টি, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ২০০ আসন কমে ১ হাজার ৫০টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ১৫৭টি কমে ১ হাজার ৬৫টি, জীববিজ্ঞান অনুষদে ৯০টি কমে ৪৯৫টি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষতে ১০টি কমে ২৩৫টি, চারুকলা অনুষদে ৫টি আসন কমে ১৩০টি, আইন অনুষদে ২০টি কমে ১১০টি এবং ১০টি ইনস্টিটিউটে ৪০টি আসন কমিয়ে ৮৭৫ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

অন্যদিকে বিজ্ঞান অনুষদে আসনসংখ্যা ২টি বেড়ে ৪৭০টি, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদে ১০টি আসন বাড়িয়ে ২৪৫টি এবং ফার্মেসি অনুষদে ১০টি বাড়িয়ে ৭৫ আসন করা হতে পারে।

যেসব বিভাগে আসন কমতে পারে
সুপারিশ অনুযায়ী, কলা অনুষদের বাংলা বিভাগে ১২টি, ইংরেজিতে ৩০টি, আরবিতে ৫০টি, ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে ২৫টি, উর্দুতে ৭০টি, সংস্কৃতে ২৫টি, পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজে ৪০টি, ইতিহাসে ২০টি, দর্শনে ৫০টি, ইসলামিক স্টাডিজে ৮৫টি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে ৫০টি, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনায় ১০টি, ভাষাবিজ্ঞানে ২০টি, সংগীতে ২০টি, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতিতে ৪০টি আর নৃত্যকলা বিভাগে ৫টি আসন কমতে পারে।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নয়টি বিভাগের মধ্যে আটটিতেই আসন কমানোর সুপারিশ করেছে ডিনস কমিটি। এর মধ্যে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং ও ফিন্যান্সে ৩০টি করে আসন কমিয়ে ১৫০ এবং ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে ১৫টি করে আসন কমিয়ে ১০০ করার সুপারিশ করা হয়েছে। ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগে ৫০টি আসন কমিয়ে ১০০ করার কথা বলা হয়েছে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ৫০টি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ২০টি, সমাজবিজ্ঞানে ৩৫টি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় ৬টি, লোকপ্রশাসনে ২০টি, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নে ২০টি, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজে ৫টি, অপরাধবিজ্ঞানে ১০টি, যোগাযোগ বৈকল্যে ১০টি আর জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগে ১০টি আসন কমানোর কথা বলা হয়েছে।

জীববিজ্ঞান অনুষদের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগে ২০টি, উদ্ভিদবিজ্ঞানে পাঁচটি, প্রাণিবিদ্যায় ২০টি আর মনোবিজ্ঞানে ৫০টি আসন কমতে পারে। আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে ৪০টি আসন কমিয়ে ৮০ করা হতে পারে। আইন অনুষদের আইন বিভাগে ২০টি আসন কমিয়ে ১১০ করার কথা বলা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের আসনসংখ্যা ৫টি কমিয়ে ২৫টি করার সুপারিশ করা হয়েছে।

ইনস্টিটিউটগুলোর মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৪০টি আসন কমিয়ে ১২০টি, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫টি কমিয়ে ১০০ এবং আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ২০টি আসন কমিয়ে ১৪০ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

যেসব বিভাগে আসন বাড়তে পারে
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজে সাতটি, অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগে ১৫টি, অর্থনীতি বিভাগে দুটি, পপুলেশন সায়েন্সেসে ১৫টি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে ১২টি, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগে ৫টি, পরিসংখ্যান বিভাগে ২টি, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগে ১৫টি, দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় ১০টি, আবহাওয়াবিজ্ঞানে ৫টি, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫টি, রোবটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫টি এবং ফার্মেসি বিভাগে ১০টি আসন বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ৫টি আসন বাড়িয়ে ৪০টি আর তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে ২০টি বাড়িয়ে ৫০টি করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বাকি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলোতে আসন অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

যা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসনব্যবস্থা, গ্রন্থাগার-সুবিধা, শ্রেণিকক্ষ ও পরিবহন থেকে শুরু করে সর্বত্র অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপ রয়েছে। গত দুই দশকে অপরিকল্পিতভাবে নতুন নতুন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট খোলা এবং একই অনুপাতে অবকাঠামো না বাড়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। অবকাঠামো বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘ভৌত মহাপরিকল্পনা’ প্রস্তুত করেছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভৌত মহাপরিকল্পনার আগে একটি ‘একাডেমিক মহাপরিকল্পনা’ প্রস্তুতের আহ্বান জানান। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আসনসংখ্যা কমানোর উদ্যোগ নেয়।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনভিত্তিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে বেকারত্ব কমিয়ে আনার জন্য আসনসংখ্যা কমানোর উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পৃথিবীর মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকেন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রয়েছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ২০ জনের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষকের ব্যবস্থা আছে। অনুপাতটি ১৬: ১- এ নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ ১৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকবেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.