দেশে কার্যরত সব বেসরকারি ব্যাংকের কর্মীদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে ন্যূনতম বেতন-ভাতা হবে ২৮ হাজার টাকা। আর শিক্ষানবিশকাল শেষে সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা হবে ৩৯ হাজার টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যাতে অধিকতর উজ্জীবিত হয়ে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন সে উদ্দেশ্যে এবং ব্যাংক কোম্পানির যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ নির্দেশনা দেওয়া হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তরুণ ও শিক্ষিত ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যাতে অধিকতর প্রশিক্ষিত ও দক্ষ হয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নিজ প্রতিষ্ঠান মনে করে একনিষ্ঠ ও নিরবচ্ছিন্নভাবে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন এবং ভবিষ্যতে মেধাবীরা যাতে ব্যাংকিংকে আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহী হন সে লক্ষ্যে এখন থেকে এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার অথবা সমপর্যায়ের কর্মকর্তা, যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেলে এরূপ নিযুক্ত কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে (প্রবেশন পিরিয়ড) ন্যূনতম বেতন-ভাতা হবে ২৮ হাজার টাকা।
শিক্ষানবিশকাল শেষে এই কর্মকর্তাদের প্রারম্ভিক মূল বেতনসহ ন্যূনতম সর্বমোট বেতন ভাতা হবে ৩৯ হাজার টাকা।
নতুন নির্ধারিত বেতন-ভাতা কার্যকর করার পর একইপদে আগে থেকে কর্মরত কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করতে হবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অব্যবহিত নিম্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তার বেতন-ভাতার সঙ্গে ব্যাংকে সর্বনিম্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতার পার্থক্য যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে। অনুরূপভাবে সব স্তরের কর্মকর্তাদের জন্যও আনুপাতিক হারে বেতন-ভাতা নির্ধারণ করতে হবে।
কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীর বেতন-ভাতা কোনো অবস্থাতেই বর্তমান বেতন-ভাতার চেয়ে কম হবে না।
এরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইনক্রিমেন্ট দিয়ে বেতন ভাতা নির্ধারণ করতে হবে।
এর বাইরে ব্যাংকের সার্ভিস রুলস্ অনুযায়ী কর্মকর্তা/কর্মচারীরা অন্যান্য ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা যথানিয়মে প্রাপ্য হবেন।
এ ছাড়া ব্যাংক-কোম্পানি কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ বা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির জন্য আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য অর্জনের শর্ত আরোপ করা যাবে না। শুধু নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারা বা অদক্ষতার অজুহাতে ব্যাংক/কোম্পানির কর্মকর্তাদের প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। একই অজুহাতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না। অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণিত কোনো অভিযোগ না থাকলে কর্মকর্তা কর্মচারীগণকে চাকরিচ্যুত করা বা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না।
মেসেঞ্জার/পরিচ্ছন্নতাকর্মী/নিরাপত্তাকর্মী/অফিস সহায়ক অথবা সমজাতীয় পদে/সর্বনিম্ন যে কোনো পদে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের ন্যূনতম প্রারম্ভিক বেতন-ভাতা হবে ২৪ হাজার টাকা।
তবে ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় ব্যাংকিং সেবা প্রদানে নিয়োজিত বিভিন্ন আউটলেটে নিযুক্ত ব্যাংকের এজেন্ট বা এজেন্টের মাধ্যমে নিযুক্ত ব্যক্তিগণের বেতন ভাতা/পারিশ্রমিক চুক্তি/স্ব স্ব এজেন্ট কর্তৃক নির্ধারিত হয়, বিধায় তাদের ক্ষেত্রে ওপরে বর্ণিত নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের বেতন কাঠামো সরকার কর্তৃক জারিকৃত জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত/অনুসরণে নির্ধারিত, বিধায় ওই ব্যাংকগুলোর জন্য ওপরে বর্ণিত নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না।
নির্দেশনার আলোকে নতুন নির্ধারিত বেতন-ভাতা আগামী ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।
বিস্তারিত দেখতে: https://therisingcampus.com/wp-content/uploads/2022/01/jan202022brpd02.pdf