সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনকারী ২৪ শিক্ষার্থী গতকাল বুধবার শীতের সারা রাত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছিলেন। গতকাল বেলা ২টা ৫০ মিনিট থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন এই শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অনশনকারী শিক্ষার্থীরা একই জায়গায় অবস্থান করছিলেন। তাঁদের সমর্থন ও সাহস জোগাতে আছেন আরও অনেক শিক্ষার্থী।
গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আন্দোলনস্থলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষসহ প্রায় দুই শ শিক্ষক। তবে এ সময় তাঁদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দিতে দেননি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলেই তাঁরা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এ সময় শিক্ষকেরা হ্যান্ডমাইকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কথা বলতে চাইলেও তাঁরা দাবি আদায়ের স্লোগান শুরু করেন।
রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার বিচার হোক। বিনা দোষে যাতে শাস্তি না পান, সে বিষয়টিও মনে রাখা উচিত। এ জন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রয়োজন। তদন্তের মাধ্যমে যাঁর বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলবে, সে যে-ই হোক, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে আমরা ছাত্রদের সঙ্গে একমত। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এ সুযোগ আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে চেয়েছিলাম।’ পরে শিক্ষকেরা রাত একটার দিকে আন্দোলনস্থল ছেড়ে যান।
এ আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।