ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
এছাড়া টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর আগে তথ্য-প্রমাণের জন্য গোপনে বাংলাদেশেও এসেছিল ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের দল। শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ নিতে গোপনে বাংলাদেশে এসেছিলেন যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা। এছাড়া বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকারীদের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠক করেছেন তারা। এ বৈঠকের আয়োজন করে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন।
গত মাসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে টিউলিপের দুর্নীতি নিয়ে নতুন তথ্য-প্রমাণ দেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। গত ৫ আগস্ট টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ব্রিটিশ গোয়েন্দারা দুইবার ঢাকা সফর করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ও শেখ হাসিনা ছাড়াও তাদের পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে পাবনার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনা এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিকও। বলা হচ্ছে, টিউলিপ এতে মধ্যস্থতা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
বাংলাদেশি সূত্রের বরাতে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ব্রিটিশ গোয়েন্দারা বৈঠকে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আনা অভিযোগ তদন্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। ওই সূত্র আরও জানায়, এনসিএ যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেট এমপির বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টাও করতে পারে।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে লন্ডনে যথাক্রমে ৭ লাখ ও ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যের দুটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগ ওঠার পর এরইমধ্যে মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ।
এ অবস্থায় টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ইমেইল রেকর্ড এবং এমনকি তাঁকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, দেশটির কোনো নাগরিক বিদেশে দুর্নীতি করলে তাঁর ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। অর্থাৎ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো প্রমাণিত হলে ১০ বছর বা তারও বেশি সময়ের কারাদণ্ড হতে পারে তার।