ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সমাধানে শেখ মুজিবুর রহমান হলের নবনির্মিত বর্ধিত জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়েছে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন বর্ধিত এই ভবনে ২৫২টি কক্ষে ১০০৮ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারবেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ভবনটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ১১১তলা বিশিষ্ট শহিদ স্মৃতি ভবনের ছাত্র কক্ষসহ পেছনের বারান্দা ও করিডোরে অর্থাৎ পুরো ভবনটি ফ্লোর টাইলস দ্বারা আচ্ছাদিত। এছাড়া ভবনটি সি.সি. ক্যামেরা, আধুনিক ফায়ার হাইড্রেট সিস্টেম, ইমার্জেন্সি সিঁড়ি, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রদের জন্য র্যাম্প, হল ভবনে ৩টি, আবাসিক ভবরন ২টি মোট ৫টি লিফট স্থাপন করা হয়েছে। আবাসিক শিক্ষক ভবনটির নিচ তলা পার্কিং সুবিধাসহ ইমার্জেন্সি সিঁড়ি, সি.সি ক্যামেরা, ফায়ার হাইড্রেট সিস্টেম অর্থাৎ আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টের ন্যায় সব প্রকার সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান।
জুলাই শহিদ স্মৃতি ভবনটির নিচ তলায় প্রাধ্যক্ষ অফিস কক্ষ, প্রাধ্যক্ষ অফিসের ওয়েটিং রুম, মিটিং রুম, ডাইনিং, অডিটরিয়াম, সেলুন, লন্ড্রি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিস কক্ষ রয়েছে।দ্বিতীয় তলায় আবাসিক শিক্ষক কক্ষ, মসজিদ, ক্যান্টিন, টিভি রুম, গেমস রুম, সাংস্কৃতিক কক্ষ, সাইবার কক্ষ, ইমামের আবাসিক কক্ষ ইত্যাদি। তৃতীয় তলা থেকে ১১তলা পর্যন্ত ছাত্রকক্ষ ও রিডিং রুম।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ভাষা আন্দোলনের মাসের প্রথম দিনে অভ্যুত্থানের শহীদদের সম্মানে এই ভবনটি উদ্বোধন করা হলো। আমাদের জন্য আজকের এ দিনটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। এই ভবনটি নির্মাণে প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমরা হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, আজকের এই দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। শেখ মুজিব হলের এই ভবনটি নামকরণ করা হয়েছে জুলাই-বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে। বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছে তারা কী চেয়েছিলেন সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে। তারা একটি বৈষম্যহীন সমাজ চেয়েছিলেন। তাদের এই চাওয়াটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় মনে রাখে। আমাদের হয়ত সম্পদের ঘাটতি আছে কিন্তু আমাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আসন সংকট সমাধান করতে চাই। এই ভবন উদ্বোধনের মাধ্যমে সংকট কিছুটা হলেও মোকাবিলা করতে পারবো বলে আশা রাখছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, কয়েকটি কারণে আজকের দিন গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সমাধান ইস্যু। এই সংকট যেন সহনীয় পর্যায়ে আনা যায় সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। এর লক্ষ্যে আজকের এই ভবন উদ্বোধন। দ্বিতীয়ত, এই ভবনটি আধুনিক একটি স্থাপত্য। ভবনটির নামকরণটি হয়েছে শহীদদের স্মরণে। সেই শহীদদের রেখে যাওয়া দায় কিছুটা পূরণের জন্য আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ।
উপাচার্য আরও বলেন, এই হলের প্রতিটি জিনিস বিপ্লবের স্মৃতিকে ধারণ করছে। এটা আমরা ভাবতে পারলেই আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবো৷ হলটিকে সুন্দর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। আমাদের অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ভবনটি ব্যবহার করতে হবে। এসময় এই ভবন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, হলের হাউজ টিউটর, হলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।