ডেস্ক রিপোর্ট: সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেছেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কারণে অধস্তন আদালতের বিচারকদের সরকারের কাছে জিম্মিদশায় থাকতে হয়। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। রাতে কোর্ট বসিয়ে বিচারকদের সাজা দিতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটেছে। সরকারের পছন্দমতো আদেশ না দেয়ার কারণে আদেশের পরদিন বিচারককে বান্দরবনে পাঠানো হয়েছে। অনেক বিচারককে এ কারণে চোখের পানি ফেলতে দেখেছি। এই অনুচ্ছেদের কারণে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়ের স্বপ্ন স্থবির হয়ে রয়েছে।
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অধস্তন আদালতের দায়িত্বপালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি দান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলাবিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকা কেন অসাংবিধানিক হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি হয়।
আদালতে শিশির মনির বলেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় বাঁধা। এই অনুচ্ছেদকে অসাংবিধানিক ঘোষণা না করা হলে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কারণে বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠন থেমে রয়েছে। অবিলম্বে সংবিধানের এই অনুচ্ছেদটি অবৈধ ঘোষণা হওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ আগস্ট হাইকোর্টের ১০ জন আইনজীবী ১১৬ অনুচ্ছেদ অসাংবিধানিক ঘোষণা চেয়ে রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে বলা হয়, অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকার কারণে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের সরাসরি হস্তক্ষেপ দেখা যায়। এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করে। পরে ২৭ অক্টোবর সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে হাইকোর্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট।