বুটেক্স প্রতিনিধি: জুলাই বিপ্লবের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করা হয়নি। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন হলেও বুটেক্স প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হলের আবাসিক ছাত্রীরা শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করেন। তারা ‘প্রীতিলতা হল’ নামটি নির্বাচন করেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রদূত প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের অবদান স্মরণ করে। ছাত্রীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোটের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং হলের পুরোনো নামফলকও সরিয়ে ফেলা হয়।
তবে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব সিন্ডিকেট মিটিংয়ে অনুমোদন পায়নি। সিন্ডিকেট সদস্যদের মতে, প্রীতিলতা নাম রাখার যৌক্তিকতা নেই। আন্দোলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্য নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়।
এরপর হলের শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত নতুন নামগুলো ছিল নবাব ফয়জুন্নেসা, জাহানারা ইমাম, ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম, সুফিয়া কামাল এবং বেগম রোকেয়া। শিক্ষার্থীরা এগুলো নিয়ে আবার আবেদন করেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
৪৮তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, ডিসেম্বরের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে নাম চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মিটিং শেষে কোনো আপডেট দেওয়া হয়নি। তার মতে, একটি আবাসিক হলের নাম ঐতিহাসিক বা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তির নামে হওয়া উচিত, কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির নামে নয়।
অন্য এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, হলের নামফলক না থাকায় এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল হিসেবে বোঝা যায় না। সন্ধ্যার পরে গেটের আশপাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই।
শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. মাহমুদা আক্তার জানান, গত বছর শিক্ষার্থীরা নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করলেও তা তখন সিন্ডিকেট মিটিংয়ে উত্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এরপর ভিসি পদত্যাগ করেন, যা প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে। নতুন ভিসির সময় শিক্ষার্থীদের পুনরায় আবেদন করতে বলা হয়, যা তারা ৯ ডিসেম্বর জমা দেন। এখন বিষয়টি মাইনোরস পাস করে পরবর্তী সিন্ডিকেট মিটিংয়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রাশেদা বেগম দিনা বলেন, শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব একাডেমিক কাউন্সিলে পাস হয়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক নাম পরিবর্তনের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। শিক্ষার্থীদের দেওয়া প্রস্তাবিত নামগুলোর মধ্যে থেকে অফিসিয়াল মিটিংয়ে একটি নাম চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
হলের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মিটিংয়ের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা।