The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫

‘নিজেদের স্বার্থে টিউলিপকে মন্ত্রী বানায় লেবার পার্টি’

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন

‘ক্ষমতাসীনদের নিজস্ব স্বার্থ হাসিলের জন্য টিউলিপ সিদ্দিককে যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ডাউনিং স্ট্রিটের ভেতরে এমন কিছু লোক আছে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলে টিউলিপকে মন্ত্রী বানায়।’

এমনটি উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) টিউলিপের পদত্যাগের পর প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

গার্ডিয়ান জানায়, টিউলিপকে লেবার পার্টি বা ক্ষমতাসীনদের ব্যানার হিসেবে ব্যবহারের একটি মনোভাব ছিল স্পষ্ট। কিন্তু বাংলাদেশে তার খালা শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ডাউনিং স্ট্রিটের সেই লোকেরা এখন হয়তো আফসোস করছেন, ইশ! টিউলিপকে সামনে আনার আগে তারা যদি দ্বিতীয়বার ভাবতেন। ক্ষমতাসীনদের এ মনোভাবের কারণ হচ্ছে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির সাথে তার যোগসূত্রের মাত্রা স্পষ্ট হওয়া।

যখন তাকে ব্রিটিশ সরকারের দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়; তখন শেখ হাসিনার সরকার ছিল বেশ প্রতাপশালী। পারিবারিক গাম্ভীর্য টিউলিপকে সবার কাছে সমাদৃত করে। লেবার পার্টির নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সহযোগিতা করেন। টিউলিপ সিদ্দিকের পাশাপাশি কিয়ার স্টারমারের প্রচারে নেতাকর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করেন।

কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ পরিস্থিতি যদি তখন থাকত তবে ডাউনিং স্ট্রিটের ভেতরের লোকজন তাকে দায়িত্ব দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করতেন।

শেখ হাসিনার সরকারের দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপের নাম উঠে এসেছে। তিনি যুক্তরাজ্যে দুটি ফ্ল্যাট আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে নিয়েছেন। এ ছাড়া রাজধানীর পূর্বাচল নিউ টাউনের প্লট বরাদ্দে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগে পৃথক ৩টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তীকে।

বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেন, পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করেছেন। এ বিষয়ে দুদকের কাছে যথেষ্ট প্রমাণাদি রয়েছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত পৃথক ৩টি মামলা করে দুদক।

খবরটি যুক্তরাজ্যেও প্রচার পায়। এ ছাড়া অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত অন্য ঘটনায় টিউলিপের সংশ্লিষ্টতা তদন্ত করছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।

একজন লেবার এমপি নাম প্রকাশ না করার শর্তে গার্ডিয়ানকে বলেন, এটি ছিল (টিউলিপকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া) ক্ষমতাসীনদের নিজস্ব লক্ষ্য। সবাই জানত যে, তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক রাজবংশের একজন সদস্য। যার বিশাল ক্ষমতা এবং অর্থের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। পৃথিবীতে কে ভেবেছিল যে তাকে এই চাকরি দিয়ে সবার দৃষ্টিতে পড়তে হবে!

এদিকে, টিউলিপের পদত্যাগের পর প্রকাশিত প্রতিবেদনে গার্ডিয়ান জানায়, টিউলিপ মন্ত্রিত্বের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন কি না তা শেষ পর্যন্ত লাউরি ম্যাগনাস বুঝতে পারেননি। ম্যাগনাস তাকে অভিযুক্তও করেননি বা তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কোনো কিছু করার প্রমাণ খুঁজে পাননি। তবে ম্যাগনাস টিউলিপকে সরাসরি নির্দোষ ঘোষণা না করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এরপরই টিউলিপ সিদ্দিক স্বেচ্ছায় মন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.