ডেস্ক রিপোর্ট: পুরান ঢাকার আকাশে উড়ছে নানা রঙের ঘুড়ি, ঠিকানাবিহীন খোলা চিঠির শহর যেন রাজধানী। আলোর ঝলকানিতে ইটপাথরের নগরী পেয়েছে এক মোহময় রূপ। তবে নানা বিধিনিষেধের কারণে চারশ’ বছরের পুরনো সাকরাইন উৎসব এবার কিছুটা ঢিলেঢালা ছিল।
পৌষের বিদায় লগ্নে আনন্দে মেতেছে ঢাকাবাসী। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পরই পুরান ঢাকার আকাশজুড়ে ছিল আলোর রোশনাই। ভবনের ছাদে ছাদে দেখা যায় আলোকসজ্জা। বাড়ির ছাদে ছাদে লাইট শো, ডিজে, আতশবাজি উৎসবের মূল আকর্ষণ। আতশবাজিতে ছেয়ে যায় রাতের আকাশ। এত আলোর কাছে শীত-কুয়াশা যেন নস্যি।
পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, লালবাগ ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে পড়েছে সাকরাইনের মহাধুম। এমন উৎসব দেখতে অংশ নিয়েছেন বিদেশিরাও। সাকরাইন ঘিরে দিনভর আকাশে ওড়ে রঙ-বেরঙের ঘুড়ি।
এদিকে উৎসবের অংশ হিসেবে সারাদিন আকাশে রঙ-বেরঙের ঘুড়ি ওড়ে। ছাদে কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে চলে ঘুড়ি কাটাকাটির প্রতিযোগিতা। উপভোগ করেন ছেলে-বুড়ো সবাই। সাকরাইন উৎসব যেন সেতুবন্ধনের কাজ করে অতীতের সঙ্গে বর্তমানের।
যেভাবে এলো সাকরাইন
সাকরাইন শব্দটি সংস্কৃত শব্দ সংক্রাণ থেকে এসেছে। যার আভিধানিক অর্থ হলো বিশেষ মুহূর্ত। অর্থাৎ বিশেষ মুহূর্তকে সামনে রেখে যে উৎসব পালিত হয় তাকেই বলা হয় সাকরাইন। এই সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অনেক দেশেই উৎসব পালিত হয়, তবে ভিন্ন ভিন্ন নামে। বাংলায় দিনটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৪০ সালের এই দিনে মোঘল আমলে নায়েব-ই-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খানের আমলে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। সেই থেকে দিনটিকে ঘিরে উৎসব আনন্দে মেতে ওঠেন পুরান ঢাকার মানুষেরা। ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ না রেখে সবাই এই উৎসবে শামিল হন।