The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪

ভবিষ্যতে এলাকাভিত্তিক আর কোনো বৈষম্য থাকবে না : আসিফ মাহমুদ

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এলাকাভিত্তিক আর কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি যে এলাকা থেকে নেতা হয়, সেখানেই উন্নয়ন হয়। যে এলাকা থেকে প্রধানমন্ত্রী হয় সে এলাকায় উন্নয়ন হয়। আর বাকি এলাকা বৈষম্যের শিকার হয়।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো অবহেলিত ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে আমরা উত্তরবঙ্গের অবহেলিত ও অনুন্নত এলাকাগুলোর জন্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো গ্রহণ করব, যাতে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় শেষ হয়ে গেলেও আপনারা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত না হন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনের সময় আমাদের স্লোগানে থাকতো টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। পুরো বাংলাদেশ এই টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া হওয়ার কারণে এই তেঁতুলিয়াকে সবাই চিনে। আজকে আসার সুযোগ হলো, দেখার সুযোগ হলো। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। বিজয়ের মাসে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি। আমরা ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি। তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

তিনি আরও বলেন, আমি উত্তরবঙ্গের প্রায় ১২টি জেলা ও ৫টি উপজেলা পরিদর্শন করব। শুধু একটি বিশেষ কারণে। আপনারা জানেন বিগত সময়ে উন্নয়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ অবহেলিত হয়েছে, বঞ্চিত হয়ে আসছে। আমি সরেজমিনে ঘুরে পরিদর্শন করতে চেয়েছি, আপনাদের কথা শুনতে চেয়েছি, আপনাদের দাবিগুলো জানতে চেয়েছি। উত্তরবঙ্গে যে বঞ্চনা এবং বৈষম্য হয়েছে সেটা নিরসনের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাজ করবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, এই অনুষ্ঠানে তেঁতুলিয়া উপজেলা ও পঞ্চগড় জেলার সরকারি কর্মকর্তারা যারা রয়েছেন, আপনাদের প্রতি আহ্বান থাকবে নাগরিক সেবাকে প্রায়োরিটি দিয়ে কাজ করবেন। জনগণকে কোনো প্রকার হেনস্তা কিংবা কালক্ষেপণ, ঘুষ ও দুর্নীতি- এ ধরনের কোনো কিছুর সঙ্গে জড়াবেন না। আর তেঁতুলিয়াবাসীর প্রতি আহ্বান থাকবে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি এ ধরনের আবদার করে ঘুষ খায়, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত আছে বলে মনে হয় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে জানাবেন। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করার বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা একটি সাধারণ সিদ্ধান্ত হিসেবে উত্তরবঙ্গের উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং আমাদের বিদ্যমান যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো থেকে উত্তরবঙ্গে বরাদ্দ বৃদ্ধির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এবং ইতোমধ্যে প্রতিটি মিটিংয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিগত সময়ে যেসব এলাকা বৈষম্যের শিকার হয়েছে সেখানে আমরা উন্নয়ন কার্যক্রম বৃদ্ধি করবো।

তিনি আরও বলেন, উত্তরবঙ্গ বাংলাদেশের ফসল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকে। আমি যতগুলো উপজেলা ভিজিট করেছি আমি সেখানে দেখলাম যে, ৬০-৭০ শতাংশ বেশি ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। সুতরাং এখানে কৃষি ও শিল্পের বিকাশের সুযোগ রয়েছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উত্তরবঙ্গের কৃষিভিত্তিক শিল্প বিকাশে কাজ করবে। এর প্রথম উদ্যোগ হিসেবে সুগার মিলগুলো চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সব বাস্তবায়ন করা হবে। এর বাইরেও সরকারের অন্যতম অ্যাজেন্ডা হিসেবে উত্তরবঙ্গের কৃষি ভিত্তিক শিল্পের বিকাশ এবং উৎপাদনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের যে সমস্যা তিস্তা নদীর শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট এবং বন্যার মৌসুমে ভাসিয়ে দেওয়া, সেই সমস্যা সমাধানে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এই জানুয়ারি মাসেই আমাদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও আমি আবারও উত্তরবঙ্গে আসব।

এ সময় খেলাধুলার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমি যেহেতু যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছি তাই খেলাধুলাকে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে যুব মন্ত্রণালয় অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সঠিক ও দায়িত্বশীল স্টেকহোল্ডার দিয়ে উপজেলা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে পুনর্গঠন করা হবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত খেলাধুলাকে বিশেষভাবে প্রণোদনা দেওয়া হবে। আমি তেঁতুলিয়া উপজেলার সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও খেলাধুলাকে আগামী তারুণ্যের উৎসবে আয়োজন করার জন্য উপজেলা পরিষদে ৫০ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা করছি। আপনাদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তরুণদের প্রতি আহ্বান থাকবে কোনো প্রকার বাজে সঙ্গ, মাদক এড়িয়ে চলবেন। খেলাধুলাসহ রাষ্ট্র সংস্কার কাজে এগিয়ে আসবেন। তারই অংশ হিসেবে জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া তারুণ্য উৎসবে কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হবেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.