ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের যেকোনো প্রকল্পের ব্যয় ভারতের তুলনায় বা আশেপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেছেন রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মাদ ফাওজুল কবির খান। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে (কমলাপুর) ঢাকা-খুলনা রুটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন রেল একটি সাশ্রয়ী যাতায়াত ব্যবস্থা। খুব অল্প খরচে এর মাধ্যমে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু আমাদের রেলের নানান রকম সংকট রয়েছে। আপনারা অনেকে অসন্তোষ ব্যক্ত করে থাকেন। আপনাদের জানতে হবে কেন আপনাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারে না রেল। আমাদের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে, কোচের সংকট, জনবলের সংকট রয়েছে। সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে রেলের কর্মীরা বড় দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, পদ্মা রেলসেতু সংযোগের মাধ্যমে খুলনা এবং ঢাকার মধ্যে একটা দ্রুত যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে। পৌনে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে খুলনায় পৌঁছে যাবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা, রেলের সর্বস্তরের কর্মচারীরা রেলের মহাপরিচালকসহ, বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন।
‘রেলের আজকের যে বর্তমান অবস্থা, এই অবস্থাতে আসার একটি কারণ হচ্ছে অপব্যয়। যত্রতত্র রেল স্টেশন বানানো হয়েছে, লাইন বিস্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইঞ্জিন, কোচ, জনবল আছে কি না সেগুলো না দেখে এসব করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের যেকোনো প্রকল্পের ব্যয় ভারতের তুলনায় এবং আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। রেলের যারা ইঞ্জিনিয়ার, রেলে যারা সেনাবাহিনী সহায়তা করেন, সবাইকে অনুরোধ করব কীভাবে এটার খরচ কমানো যায় দেখবেন। ব্যয় যদি কমানো না যায় তাহলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত রেলসেবা দেওয়ার প্রত্যাশা আমরা পূরণ করতে সক্ষম হবো না।
সাধারণ যাত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সবাই আশা করেন যে, রেল গাড়িটি তাদের বাড়ির পাশে থামবে। আবার তারা এটাও চান, তারা দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাবেন। এটা সম্ভব না। আপনি যত স্টপেজের সংখ্যা বাড়াবেন তত যাতায়াতের সময় বাড়বে। এখন এমন একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, প্রত্যেক জায়গাতেই রেলস্টেশন করতে হবে। প্রত্যেক স্টেশনেই রেলগাড়ি থামাতে হবে। এটা একটা ভালো লক্ষণ নয়। যেখানে যাত্রী বেশি হবে সেখানেই গাড়ি থামবে। যেখানেই রাজস্ব পাওয়া যাবে, সেখানে রেলগাড়ি থামবে।
রেলওয়ে উপদেষ্টা বলেন, রেলওয়ে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। রেলকে তার আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে হবে। সরকারকে সব খাতেই কিন্তু ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই ভর্তুকি আর কত দেওয়া যাবে? এজন্য আমাদের ব্যয়-সাশ্রয়ী হতে হবে।