The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪

বাবা তুমি শান্তিতে ঘুমাও, আবার আমাদের দেখা হবে: নিহত বুয়েট শিক্ষার্থীর মা

ডেস্ক রিপোর্ট: মুহতাসিমের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার ছেলেকে শেষ বিদায় জানিয়ে বললেন, বাবা, তুমি শান্তিতে ঘুমাও। একদিন আবার আমাদের দেখা হবে।

গভীর রাতে পূর্বাচল এলাকায় একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র মুহতাসিম মাসুদ। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে, যখন পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিন বন্ধু। মুহতাসিমের সঙ্গে ছিলেন তার সহপাঠী মেহেদী হাসান এবং অমিত সাহা। তারা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন, এমন সময় পেছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি প্রাইভেট কার তাদের ধাক্কা দেয়। এতে মুহতাসিম ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান, এবং মেহেদী হাসান ও অমিত সাহা গুরুতর আহত হন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তবে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

এদিকে, মুহতাসিমের মৃত্যুর খবর ভোরে পান তার মা রাইসা সুলতানা এবং বাবা মাসুদ মিয়া। এই দুঃখজনক সংবাদে হতবাক হয়ে পড়েন তারা। মুহতাসিমের মা রাইসা সুলতানা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং ছেলেকে শেষবারের মতো দেখে বিদায় জানান।

ঘটনাটি ঘটে পূর্বাচল ৩০০ ফিট নীলা মার্কেট এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ওই এলাকায় পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন বুয়েটের ছাত্র মুহতাসিম মাসুদ এবং তার দুই বন্ধু। তারা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, এমন সময় একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের ওপর উঠে যায়। প্রাইভেট কারের ধাক্কায় মুহতাসিম মুহূর্তেই ছিটকে গিয়ে মারা যান। মেহেদী হাসান এবং অমিত সাহা গুরুতর আহত হন এবং দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মুহতাসিমের মা রাইসা সুলতানা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় মুহতাসিম তার মোটরসাইকেল নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়েছিল। তার সঙ্গে কথা ছিল রাত ১১টার মধ্যে বাসায় ফিরবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর মুহতাসিম ফোনে জানান, সে পুরান ঢাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আছেন এবং রাতে হলে থাকবেন, বাসায় ফিরবেন না। রাতে ফোনে কথা বলে ঘুমিয়ে পড়েন রাইসা সুলতানা। পরদিন ভোরে মুহতাসিমের মৃত্যুর খবর পান।

এদিকে, একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে মুহতাসিমের বাবা মাসুদ মিয়া ভীষণ শোকাহত। অ্যাম্বুলেন্সে ছেলের লাশের পাশে বসে তিনি বলেন, “সাবেক সেনা কর্মকর্তার ছেলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি চাই, হত্যাকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।”

মুহতাসিমের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান তার পরিবার। মাসুদ মিয়া ও রাইসা সুলতানা তাদের একমাত্র ছেলে মুহতাসিমের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করেছিলেন। মুহতাসিম বুয়েটে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন। তার ছোট বোন ঢাকার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মুহতাসিমের লাশ গ্রিনরোডের বাসায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার আত্মীয়-স্বজন এবং বুয়েটের সহপাঠীরা।

মুহতাসিমের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, বিশেষ করে বুয়েট ক্যাম্পাসে। মুহতাসিমের সহপাঠীরা তাকে একজন মেধাবী ও মিশুক বন্ধু হিসেবে স্মরণ করছেন। এ ঘটনায় পুলিশ প্রাইভেট কারের চালককে আটক করেছে এবং তদন্ত চলছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.