ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতে চিকিৎসা নিতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের বয়কট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। এ ছাড়া অস্থির পরিস্থিতির কারণে দুই দেশের ব্যবসায় যাতে কোনো ধরনের লোকসান না হয়, সে বিষয়ে হুঁশিয়ারি করেছে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স।
গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের আইএমএর সদস্য ও চিকিৎসক এন কাঞ্জিলাল এবং কৌশিক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, কোনোভাবেই ভারতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।
এ ছাড়া রোগীদের কোনোভাবেই হয়রানি করা যাবে না। বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হবে। তারা চিকিৎসকদের আরো মানবিক হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
এন কাঞ্জিলাল ও কৌশিক চৌধুরী বলেন, চলমান অস্থিরতায় যেমন বাংলাদেশি রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন, তেমনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ভারতের মেডিক্যাল ট্যুরিজম।
অচিরেই এই সমস্যা কেটে যাবে বলে মনে করছে আইএমএ। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশি রোগীদের জন্য দ্রুত হেল্পলাইন চালু করা হবে, যে নম্বরে রোগীরা ফোন দিলে চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ধরনের সাহায্য পাবেন। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশ ও ভারতকে কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত ও মধুর করতে এগিয়ে আসতে হবে বলেও তারা দাবি করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কলকাতার বেসরকারি জেএন রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের কোনো রোগীকে তারা চিকিৎসা দেবে না।
ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক শুভ্রাংশু ভক্ত প্রকাশ্যে এ কথা বলেন। বাকি চিকিৎসকরা যেন সাময়িক এ সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে চরম বিরোধিতা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী, তথা কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছিলেন, একজন চিকিৎসকের কাজ হলো রোগীকে সেবা দেওয়া এবং তাকে সুস্থ করে তোলা। চরম শত্রুর সঙ্গেও চিকিৎসকরা এই আচরণ করতে পারেন না।
কেউ অসুস্থ হলে তাকে সুস্থ করব না? চিকিৎসক বা চিকিৎসাকেন্দ্রের ধর্মই তো রোগীকে সুস্থ করে তোলা। অন্যদিকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দুই দেশের ব্যবসায়ও প্রভাব পড়া উচিত নয় বলে মনে করছে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স। সংগঠনটির সদস্য তথা ভারতের খেলানা বিভাগের সেক্রেটারি অনির্বাণ গুপ্ত বলেছেন, চলমান ইস্যুতে দুই দেশের ব্যবসায় কোনো প্রভাব পড়বে না।
গতকাল তিনি বলেন, ‘সংগঠনের তরফ থেকে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। ভারত সরকার যেভাবে বলবে সেভাবেই আমাদের চলতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, দুই দেশে একটা সুষ্ঠু সম্পর্কে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। রাজনৈতিক উত্তাপ ব্যবসায় যেন না পড়ে। দুই দেশেরই উচিত দুই দেশকেই সম্মান করা। আমি মনে করি, সব কিছু ভুলে আমাদের মধ্যে যে হৃদ্যতা ছিল, সেই সম্পর্কেই আগামীতে আরো মজবুত হবে।’
উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ইস্যুতে রাজনীতি প্রবেশ করবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।