ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নবনিযুক্ত ট্রেজারার সাবেক সেনাকর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একাংশ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
সোমবার (২রা ডিসেম্বর) বেলা দেড়টায় শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ট্রেজারারের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষকরা অতিদ্রুত সেনাবাহিনীর সাবেক এই কর্ণেলকে কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষাবিদকে কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালনসহ আরো কঠোর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিবেন বলে জানান।
এসময় শিক্ষকরা বলেন, একটা প্রবাদ আছে বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে একজন শিক্ষাবিদকে ট্রেজারারের দায়িত্বে দেখতে চায়। কোন সেনাবাহিনীর সাবেক কর্ণেলকে আমরা এই পদে দেখতে চায় না।
শিক্ষকরা বলেন, আমাদের অবস্থান খুবিহ সুনির্দিষ্ট আমরা কোনোভাবেই সেনাবাহিনীর সাবেক একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার হিসেবে মেনে নিবো না। আমরা দেখতে পাচ্ছি এই ট্রেজারারকে রাতের আধারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সংবলিত প্রজ্ঞাপন জারি করে গাড়ি, কর্মকর্তা ও অফিস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য শহরে নিয়মিত পরিবহণ পুল থেকে গাড়ি পাঠানো হচ্ছে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আশঙ্কার বিষয় হলো তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার থাকাকালীন সময়ে। এমন একজন লোক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে ট্রেজারার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ মেনে না নেওয়া সত্ত্বেও তিনি সোনালি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মাকর্তাদের মাধ্যমে সোনালি ব্যাংকের ম্যানেজারকে বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের অ্যাকসেস নিতে চাচ্ছেন যা সত্যিকার অর্থে উদ্বেগজনক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল আলিম বছির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে কোনোভাবেই আমরা সেনাবাহিনীর সাবেক একজন কর্ণেলকে মেনে নিতে পারবো না। আমাদের দাবি না মেনে যদি প্রশাসন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করায় তাহলে আমরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবো।
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, সেনাবাহিনীর সাবেক একজন কর্ণেলকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যা আমাদের জন্য সত্যিই দুঃখজনক বিষয়। আমাদের দাবি অতিদ্রুত বিতর্কিত এই ট্রেজারারের নিয়োগ বাতিল করে খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অধ্যাপককে ট্রেজারার নিয়োগ দেয়া।
সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু জিহাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোন সেনাবাহিনী বা আমলাদের পুর্নবাসন কেন্দ্র অনয়। আমরা কোনোভাবেই সেনাবাহিনীর সাবেক এই বিতর্কিত লোককে ট্রেজারার হিসেবে মেনে নিব না।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা একটি বিষয় উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে আমাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও এই ট্রেজারারের জন্য প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। তিনি শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা এটাও জেনেছি আইটি দপ্তরকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তিনি ঢাকা থেকে অনলাইনে অফিস করবেন সেই ব্যবস্থা করার জন্য। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই এই ট্রেজারারকে অতিদ্রুত অপসারণ করতে হবে নতুবা আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এবিষয়ে ট্রেজারার আবু হেনা মোস্তফা কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি এখন কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না বলে ফোন কেটে দেন।