The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪

জুলাই বিপ্লবকে বিপ্লবই মনে করেন না ববি উপাচার্য; অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড.শুচিতা শরমিন জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে না বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী দেশের সকল খাতে স্বৈরাচারের দোসরদের অপসারণ ও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন তিনি। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সকল সাম্প্রতিক ঘটনাবলির ওপর ভিত্তি করে এমন অভিযোগ করছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, তিনি যোগদানের পরে প্রাথমিক শুভেচ্ছা বিনিময় ব্যতীত এখন পর্যন্ত সাধারন শিক্ষার্থীদের সাথে এমনকি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে কোনো ধরনের মতবিনিময় সভা করেননি। জুলাই বিপ্লবে সর্বপ্রথম স্বাধীন ক্যাম্পাস হিসেবে স্বীকৃত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সেই দিনগুলোতে আহত হওয়া শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের খোঁজ খবর বা তাদের থেকে সেইদিনগুলোর অভিজ্ঞতা শোনার বা মতবিনিময় করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি বিপ্লবের মাধ্যম পরিবর্তনের ধারায় নিয়োগ পাওয়া এই উপাচার্য।

৫ই আগষ্টের পর প্রসাশনের নিকট শিক্ষার্থীদের ২২ দফা দাবি পেশ করা হলেও সেগুলো নিয়েও তার উল্লেখযোগ্য কোনে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না এবং এসব বিষয় নিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনাও করছেন না বলে জানায় তারা। তাদের দাবিগুলোর এইভাবে অবমূল্যায়নকে জুলাই বিপ্লবী চেতনার পরিপন্থী হিসেবেই দেখছেন সাধারন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা তারা আরো জানান,নিয়োগ প্রাপ্তির দুই মাস হলেও এখন পর্যন্ত জুলাই বিপ্লবের চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কার্যক্রম গুলোতে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কর্ণধারের কাছ থেকে। বরং ছাত্র-জনতার উপর গনহত্যাকারী স্বৈরাচার সরকারের নামে বিদ্যমান হল এবং স্বৈরাচারের দোসরদের নামে এখনো বিভিন্ন স্থাপনার নাম বলবৎ থাকলেও যোগদানের দুইমাসেও একটি সিন্ডিকেট সভার আহবান করে সেগুলোর পরিবর্তন করতে করেননি এই উপাচার্য। অথচ এই দাবিটি জুলাই বিপ্লবী চেতনার মূল দাবি গুলোর অন্যতম হলেও তার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। তাছাড়াও তিনি একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন যা জুলাই বিপ্লবী চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক বলে জানান শিক্ষার্থীরা। তারমধ্যে

আওয়ামী সরকারের দোষদের অনিয়মতান্ত্রিক ডিন নিয়োগ, বিতর্কিত ব্যাক্তি কলিমুল্লাহ কে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্তিকরন।

এছাড়াও সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় চলমান বিজয় ২৪ আয়োজিত জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদের স্মরণে “স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য নিয়েও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। টুর্নামেন্টটি জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত হলেও তার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি একবার ও সেই সকল শহীদের স্মরণ করেননি এমনকি তাদের নিয়ে কোনো কথাই বলেননি তিনি এমনটিই অভিযোগ করছেন সেখানে উপস্থিত সচেতন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে তার বক্তব্যের একটি রেকর্ড ও আসে এই প্রতিবেদকের নিকট, সেখানেও অভিযোগটির সত্যতা পাওয়া যায়।

এই বিষয়টি নিয়ে খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ বলেন, হলগুলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় স্বৈরাচার দোসরদের নাম অপসারণের বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারিহা আফসানা বলেন, আমরা স্বৈরাচারের কোন চিহ্ন কোথাও রাখতে চাইনা। অথচ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার এত পরেও আমাদের ঘাড়েই রয়েছে স্বৈরাচারের নাম। হলের নাম প্রস্তাব করা সত্ত্বেও এখনো হলের নাম পরিবর্তন হয়নি। নতুন ছেলেমেয়েরা পুরনো নামে হলে উঠবে। ভিসি ম্যামকে বলা সত্ত্বেও তিনি এখনও এর কোন পদক্ষেপ নেন নাই। যা খুবই হতাশা ও দুঃখজনক।

উপাচার্য জুলাই বিপ্লবকে কতোটা ধারণ করেন তা নিয়ে প্রশ্ন রেখে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আন্দোলনে গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন তিনি।যেহেতু তার আগমনটাই জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবকে কেন্দ্র করেই হয়। তাই বিপ্লবের এই চেতনাকে ধারণ ও যথাযথ সংরক্ষণ করা তাহার নৈতিকদায়িত্ব ছিল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো তাহার যোগদানের দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে স্পিরিট ও প্রত্যাশা শূন্যের কোটায়। প্রশাসনের প্রতি আমাদের যে ২৮ দফা দাবি তা বাস্তবায়নের কোন ধরনের অগ্রগতি নাই, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ নেয়া তো দূরের কথা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নেই কোন সম্বয়। এমনকি বিভিন্ন নিয়োগ কার্যক্রমে স্বৈরাচার আওয়ামী দোসর কলিমুল্লাহর মতো ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে, যারা আমার ভাইবোনদের রক্ত নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার উন্মাদনায় মত্ত ছিল। স্বৈরাচারের নামে যে হলের নাম তা পরিবর্তনের দাবি উঠলেও তাহার কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। তাহার এহেন উদাসীনতাপূর্ণ কার্যক্রম বিপ্লবী চেতনার প্রতি স্পষ্ট অবমুল্যানের সামিল যা আমাদের জন্য উদ্বেগের। আন্দোলনের শহীদরা আমাদের প্রেরণার বাতিঘর, যে মহান উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে তাদের মহৎ ত্যাগ-বিসর্জন, তা আমরা কোনভাবেই ব্যার্থ হতে দিব না।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.