The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ২০শে নভেম্বর, ২০২৪

জবি সাংবাদিকের উপর হামলা, বিচারের দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

জবি প্রতিনিধি: ‘দৈনিক কালের কণ্ঠে’র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জুনায়েদ শেখের উপর ছাত্রদল নেতাদের হামলার ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোট’ এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় দোষীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন জবির ক্রিয়াশীল সাংবাসিকদের তিন সংগঠনের এই জোট।

জনকণ্ঠ পত্রিকার জবি প্রতিনিধি মামুন শেখ বলেন, সাংবাদিকরা নির্দিষ্ট কারও পক্ষের নয়, তারা দেশ ও জনগনের পক্ষে কাজ করে। কালের কন্ঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখ এর ওপর হামলা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমরা ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি, এই সময়ের মধ্যে বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবে এবং ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যতায় আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।

জবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক সুবর্ণ আস-সাইফ বলেন, ২০১৮ সালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিক সমিতি ও প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকরা এই শান্ত চত্বরে দাঁড়িয়েছিল। আজ পাঁচ বছর পর সেই নিষিদ্ধ সংগঠন না থাকলেও আবার আমদের এখানে দাঁড়াতে হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। গতকাল কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জুনায়েত শেখের উপর হামলার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যারা সমাজের কণ্ঠস্বর ও দর্পনকে বন্ধ করতে চাচ্ছেন, তাঁদের জন্য হুঁশিয়ারিসহ এই ঘটনার সাথে জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

জবি রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি অমৃত রায় বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের সত্য মিথ্যাকে তুলে ধরে। তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করা কোনভাবে কাম্য নয়। অতীতে ছাত্রলীগের মত একটি বৃহৎ সংগঠনকে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য নিষিদ্ধ হতে হয়েছে। বর্তমান ছাত্রদলও যদি সেই একই ধরণের কাজ করে, তাদেরকেও একই পরিণতি ভেগ করতে হবে। আমি ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের আহ্বান করবো, অতিদ্রুত আপনারা এই ঘটনায় কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন।

জবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউছুব ওসমান বলেন, ছাত্রদলের সন্ত্রাসী ক্যাডাররা বর্বর হামলা করেছে দৈনিক কালের কন্ঠের জবি প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখের উপর। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আন্দোলনে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগও একই কায়দায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা করতো। সাংবাদিক সমাজ কোন সন্ত্রাসী, লুটেরাদের বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ করে রাখবে না। তাদের লেখনির কলম চলমান থাকবে। অতিদ্রুত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরূদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি মাহতাব লিমন বলেন, বিগত ১৬ বছর যে ছাত্রদলের নেতারা ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেনি, দেড় বছর আগেও যারা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় এই শান্ত চত্বরে পড়েছিল, তখন সাংবাদিকরাই তাদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। জবি সাংবাদিকরা ছাত্রলীগ আমলে শিক্ষার্থী ও বিরোধী দলগুলোর অধিকার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত পর্যন্ত ঝরিয়েছে। সদ্য ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা ছাত্রদল ঠিক আওয়ামী নীতিতে ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এক্ষেত্রে প্রশাসন যদি হামলাকারীদের বহিষ্কারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে না পারে, তাহলে সারাদেশে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি দিবে।

এর আগে সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রদল নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, রোববার (১৭ নভেম্বর) পৌনে চারটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব পাশে শিক্ষার্থীদের মারামারির ভিডিও করায় সাংবাদিককে মারধর করেছে শাখা ছাত্রদলের হাতে মারধরের শিকার হন দৈনিক কালের কণ্ঠে’র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখ। হামলাকারী ছাত্রদল নেতা গণিত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসফিকুল রেইন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার অনুসারী।

মারামারির ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে গেলে প্রথমে বাঁধা দেন শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। তিনি পরিচয় জিজ্ঞেস করলে জুনায়েত শেখ নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। তবুও গণিত বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম আলিফ সাংবাদিক জুনায়েতকে বারবার বলেতে থাকে তুমি কে, তুমি কে? পরে জোনায়েদকে বুকে আঘাত করেন গণিত বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসফিকুল রাইন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.