The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রে বাতিল হচ্ছে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ বিজয়ে দেশটির লাখ লাখ অভিবাসী দম্পতিদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে গ্রিন কার্ডের অপেক্ষায় থাকা অভিবাসী ভারতীয়দের সন্তানরাও আগামী দিনে জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাবে না।

অফিসিয়াল ট্রাম্প-ভ্যান্স প্রচারাভিযানের সাইটে পোস্ট করা পরিকল্পনাটির বাস্তবায়নের জন্য একদিনের মধ্যেই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। শুধু অবৈধ অভিবাসীদের জন্যই এটি মাথাব্যথার কারণ নয় বরং খসড়া নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘আমেরিকায় জন্মালেই কোনও শিশুকে আর নাগরিকত্ব দেয়া হবে না। সন্তানের পিতামাতার মধ্যে যেকোনও একজনকে মার্কিন নাগরিক হতে হবে। অথবা থাকতে হবে গ্রিন কার্ড। তবেই তাদের সন্তানরা আগামী দিনে আমেরিকার নাগরিক হতে পারবে।’

যুক্তরাষ্ট্রে অর্ধলক্ষাধিক বাংলাদেশি দম্পতি রয়েছেন যারা এখনও কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। বৈধতার জন্য তারা আইনি লড়াই করছেন দীর্ঘদিন ধরে। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় এসব পরিবার দুশ্চিন্তায় দিন কাতাচ্ছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই ইমিগ্রেশন আইনজীবিদের সঙ্গে পরামর্শও নিয়েছেন।

নিউ ইয়র্কের একজন বাংলাদেশি ইমিগ্রেশন আইনজীবী জানান, বুধবার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার খবর পেয়ে তিনি অসংখ্য বাংলাদেশি পরিবার থেকে ফোন পেয়ে তিনি তাদেরকে আইনি পরামর্শ দিয়েছেন। এসব পরিবার এখন চরম আতঙ্কের মাঝে দিন কাটাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি রাজীব এস খান্না গণমাধ্যমকে বলেছেন- ‘এটি প্রায় নিশ্চিতভাবে মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দিষ্ট রায় রয়েছে।‍‍` পদক্ষেপের বৈধতা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে অভিবাসন অ্যাটর্নি গ্রেগ সিসকিন্ড বলেছেন, ‘এটি অবশ্যই ১৪তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনত দম্পতিদের সন্তানদের বাদ দিতে এতদূর যায় কিনা তা আমাদের দেখতে হবে।’

২০২২ সালের মার্কিন জনগণনা অনুযায়ী, আমেরিকায় ৪৮ লক্ষ ভারতীয় বসবাস করেন। তারমধ্যে ১৬ লক্ষই জন্মগ্রহণ করেছে মার্কিন মুলুকে। ট্রাম্পের নয়া নীতি অনুযায়ী, তারা কেউই মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ তাদের পিতামাতা মার্কিন নাগরিক নন বা তাদের গ্রিন কার্ড নেই। এইচ-১বি ভিসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত অনেকেই কয়েক দশক ধরে ব্যাকলগে আটকা পড়েছেন। কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রিন কার্ডের জন্য বার্ষিক লক্ষ্য ১৪০,০০০ সেট করা হয়েছে। অতিরিক্তভাবে কোনও দেশই কর্মসংস্থান বা পরিবার-ভিত্তিক বিভাগে মোট গ্রিন কার্ডের সাত শতাংশের বেশি পেতে পারে না।

এই নিষেধাজ্ঞা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কর্মসংস্থান ভিত্তিক বিভাগে ভারতীয় আবেদনকারীদের প্রভাবিত করতে পারে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া দ্বারা উদ্ধৃত ক্যাটো ইনস্টিটিউটের অভিবাসন অধ্যয়নের পরিচালক ডেভিড জে বিয়ারের একটি সমীক্ষা দেখায় যে, ভারত থেকে কর্মসংস্থান ভিত্তিক গ্রিন কার্ড ব্যাকলগ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এক মিলিয়ন অতিক্রম করেছে। যদি মৃত্যু এবং বার্ধক্যের মতো কারণগুলি বিবেচনা করা হয় (যা এই ব্যক্তিদের ব্যাকলগ পরিসংখ্যান থেকে বাদ দিতে পারে) গ্রিন কার্ডের জন্য কাউকে ৫৪ বছর থেকে ১৩৪ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এই বিভাগে অপেক্ষারত প্রায় ৪.১৪ লক্ষ ভারতীয় গ্রিন কার্ড পাওয়ার আগেই মারা যাবে এবং ভারতীয় পরিবারের এক লক্ষেরও বেশি শিশুর নির্দিষ্ট বয়স অতিক্রম করে যাবে (২১বছর বয়সে) এবং তাদের ভিসা আর বৈধ থাকবে না। তারা গ্রিন কার্ডের সারি থেকে বাদ পড়বে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.