রাইজিং ক্যাম্পাস ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের মঞ্চে ইসলামী সাংস্কৃতিক দলের গান পরিবেশ নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় পূজামণ্ডপে উপস্থিত পুর্ণার্থীরা জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জেএমসেন হলে দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর অনুষ্ঠানে এ গান পরিবেশন করে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমীর শিল্পীরা।
জানা গেছে, নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান। এসময় তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বক্তব্য প্রদান শেষে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পর পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য ও উপস্থাপক সজল চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমীর শিল্পীদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান। এরপর তারা মঞ্চে উঠেই শাহ্ আবদুল করিমের লেখা বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’-শীর্ষক গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান-গানটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পর ফেসবুক জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা উদযাপন কমিটির পদত্যাগ দাবী করে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই তাদের একটি দল পূজামণ্ডপে গান করতে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘পূজা উদযাপন পরিষদের সজল বাবু আমাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তিনি ফোন করে বলেন ‘‘আপনারা একটু আসেন। আপনাদের একটু ফ্লোর (সুযোগ) দেব। কিছু দেশাত্মবোধাক গান গাইবেন।’’ সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দুটি সম্প্রীতির গান করে। কিন্তু এটি নিয়ে একটা পক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছে ষড়যন্ত্র করতেই আমরা গান করতে গিয়েছি। আমরা তো জোরপূর্বক কিছুই করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম।’
এ বিষয়ে জানতে বারংবারবার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদ ও সজল দত্তের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।
এ ঘটনায় পূজা উদযাপন পরিষদের কমিটি বাতিল চেয়েছেন পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রক্ষ্মচারী। মুঠোফোনে তিনি বলেন, এটা খুব নিন্দনীয় কাজ হয়েছে। কারণ কোন ধর্মের প্রার্থনালয়েতো অন্য ধর্মের প্রার্থনা চলে না। যারা এটা করেছে এবং যারা এটার সহযোগিতা করেছে আমরা পূজা উদযাপন পরিষদকে বলেছি তাদের বহিষ্কার করতে হবে। আর যারা এটা করেছে তারা লাইভে এসে ক্ষমা চাইলে অন্তত আমরা তৃপ্ত হবো। এই জিনিসটা নতুন ইস্যু করে দেওয়ার পথ তৈরি করেছে।
রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এসময় তিনি বলেন, দুর্গাপূজায় অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে ধারা বহমান চট্টগ্রাম সেটির নেতৃত্ব দিবে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মামলার মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িতদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এসময় পূজা উদযাপন উপস্থিত পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সজল নামে একজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন।
এ ঘটনায় জামায়াত শিবিরের কেউ সম্পৃক্ত নয় বলে জানান মহানগর জামায়াত নেতা হেলাল নিজামী। এক ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে এসব বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।