নাইমুর রহমান: আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মানবতার সবচেয়ে বড় এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষক কথা দিয়ে শুরু করতে চাই। আরবের মরুভূমিতে তিনি জ্ঞানের বীজ বপন করেছিলেন এবং সেখান থেকেই পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল জ্ঞান বৃক্ষ। তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে আবির্ভাব হয়েছিলেন আজ থেকে প্রায় ১৪ শত বছর আগে। যে আরবে বর্বরতা বিরাজমান ছিল, সেই আরবই তার পদচারণায় হয়ে উঠেছিল শান্তির নগরী। এ পি জে আব্দুল কালাম. বলেছেন “যে শিক্ষক আপনার হৃদয়ে জ্ঞান ও মানবতার বীজ বপন করেন, তিনি আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।”
শিক্ষক হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা ও মূল্যবোধ শেখান এবং তাদের ব্যক্তিগত ও শিক্ষাগত উন্নয়নের জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি শিক্ষাদান, পরামর্শ এবং উৎসাহের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন।
আবার , জর্জ লুকাস সংজ্ঞা দিয়েছেন “শিক্ষক কেবল শিক্ষাদান করেন না, তারা আমাদেরকে স্বপ্ন দেখতে শেখান।”
আজ শনিবার, (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই শিক্ষক দিবসের ইতিহাস সমৃদ্ধ, শিক্ষক দিবস বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করা হয় এবং এর উদযাপনের পেছনে বিভিন্ন ইতিহাস রয়েছে। শিক্ষক দিবসের ইতিহাস শিক্ষকদের প্রতি সম্মান এবং তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয় । ইউনেস্কো ১৯৯৪ সালে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস ঘোষণা করে। এর পেছনে রয়েছে ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ইউনেস্কো ও আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) কর্তৃক শিক্ষকদের অধিকার, দায়িত্ব এবং তাদের মর্যাদা নিয়ে একটি সুপারিশ গ্রহণ। এটি শিক্ষকদের পেশাগত মান উন্নয়ন, কাজের পরিবেশ, এবং তাদের অধিকারকে সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
শিক্ষক দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং শিক্ষার উন্নয়নে তাদের অবদানকে স্মরণ করা। দেশ গড়ার কারিগর শিক্ষক তাই তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন ব্যক্তির যেমন কর্তব্য একই সাথে রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব তাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া, অন্যান্য পেশার তুলনায় শিক্ষকতা পেশাকে অগ্রাধিকার দেওয়া কারণ শিক্ষকই যদি না থাকে তবে দক্ষ জাতি গড়ে উঠবে না।
বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে শিক্ষক দিবস পালনের দিন ও উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও, এর মূল উদ্দেশ্য একই—শিক্ষকদের শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের মূল্যবান অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।