বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএস সাইফুল ইসলাম পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নিজ কার্যালয়ে এই ঘোষণা দেন এবং পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি।
এসময় বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনসহ সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন পরিচালক।
পদত্যাগকৃত পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বরিশালের সন্তান আমি। বরিশালের প্রতি, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার আবেগ আছে, ভালোবাসা আছে। তবে এখন থেকে পরিচালকের পদে এখন থেকে আমি আর থাকবো না।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনরতরা প্রথমে হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এরপর তারা পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। এর আগে সকালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন বিক্ষুব্ধরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন সহ বিভাগীয় কমিশনার, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা বৈঠকে বসেন।
বিক্ষুব্ধরা শিক্ষার্থীরা জানান, ৫ আগস্টের পূর্বে ৩ আগস্ট পরিচালক সাইদুল ইসলাম সহ তার অনুসারীরা স্বৈরাচারের পক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। এছাড়াও পরিচালকের নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। মেডিকেলের সকল টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, টাকা লুটপাট করা, সৎ যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানান ভাবে হয়রানী করা সহ নানান অনিয়ম তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, তার বিগত কর্মকাণ্ডের জন্য আগেই তার পদত্যাগ দাবী করা উচিত ছিল। সে হাসপাতালের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই অনিয়ম ও দুর্নীতি করে মেডিকেলের চিকিৎসা ব্যবস্থা বাণিজ্য নির্ভর করে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সাথে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে শনিবার চিকিৎসকদের উপর রোগীর স্বজনদের হামলার ঘটনায় কর্মবিরতি ও রবিবার সকাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। ফলে রোগী ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলের পরিচালক পদে বিগত কয়েক বছরে সাধারণত দুই বছর করে দায়িত্বে থাকেন পরিচালকরা। কিন্তু পরিচালক সাইদুল ইসলাম ৩ বছর ধরে পরিচালক পদে থেকে বিগত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থদের সাথে আঁতাত করে নানান অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছে। এ নিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সচিবদের সাথে তার সখ্যতা থাকায় পরিচালকের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।