সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আপনি বলেন চট করে দেশে ঢুকে পড়বেন, আপনাকে পালাতে বলেছিল কে? আপনি সব সময় বলতেন দেশের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন, বিচারকরা স্বাধীন। পালিয়ে না গিয়ে দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারতেন। দেশে ফিরুন, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হয়ে নিজের কর্মের ফল ভোগ করুন।’
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের দারুল ইসলাম একাডেমি মাঠে সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াত আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে পশ্চিম পাকিস্তান নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা করে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল। সেই প্রেক্ষাপটে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল। কিন্তু শেখ মুজিব রক্ষী বাহিনী তৈরি করে এবং বাকশাল গঠন করে স্বাধীনতাকে হত্যা করেছিল। সেই সময় থেকেই শুরু হয় নানা বৈষম্য। যার অবসান হয়েছে চলতি বছরের ৫ আগস্ট।
শেখ হাসিনার শাসনামলের সমালোচনা করে জামায়াতে আমির বলেন, জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে জামায়াতের শীর্ষ ১১ নেতাকে ফাঁসি দিয়ে বা জেলে রেখে হত্যা করা হয়েছে। তারা কেউ প্রাণ ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। শুধু তাদের পক্ষ থেকে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করানোর জন্য অনেক নাটক হয়েছে কিন্তু তারা তা করেননি।
ড. শফিকুর রহমান বলেন, ‘১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হয় পাকিস্তান, আমরা হই গর্বিত নাগরিক। কিন্তু যে স্লোগান বা প্রত্যাশা নিয়ে পাকিস্তান গড়ে উঠেছিল সরকার সেখান থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। কিন্তু জুলফিকার আলী ভুট্টো সেই বিজয় মেনে না নিয়ে দুজন প্রধানমন্ত্রী করার অন্যায় দাবি করেছিলেন, সর্বপ্রথম জামায়াতই তার প্রতিবাদ করেছিল।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সমালোচনাও করতে হবে, আবার তাদের সংস্কারের সুযোগও দিতে হবে।৫ আগস্টের বিজয়কে সুসংহত করতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করবে।’
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ শাহিনুর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রুকন সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। পরে বিকেলে একই মঞ্চে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াত নেতারা।