The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪

তালা ভেঙ্গে মারধরে ছাত্রলীগ নেতা পিস্তল শামীমের মৃত্যু, ছাত্রদলের ৫ জন শনাক্ত 

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে গণপিটুনিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লা ওরফে পিস্তল শামীমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একটি ভিডিও থেকে প্রাথমিকভাবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৫ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তারা হলেন- সাঈদ হোসেন ভুঁইয়া, রাজু আহমেদ এবং রাজন হাসান,  হামিদুল্লাহ সালমান এবং এম এন সোহাগ।
সাঈদ হোসেন ভুঁইয়া ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া রাজু আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও রাজন হাসান ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, হামিদুল্লাহ সালমান ইংরেজি ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এমএন সোহাগ কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
নিরাপত্তা কার্যালয়ের ভেতরে চেক শার্ট পরিহিত অবস্থায় শামীমকে পেটাচ্ছেন আরেকজন। এসময় তার হাতে গাছের ডাল দেখা গেছে। এ দিয়েই পিটিয়েছেন তিনি। তাকে রাজু আহমেদ বলে শনাক্ত করা গেছে।
এছাড়া রাজন হাসানের গায়ে হাফ হাতা লাল রংয়ের শার্ট দেখা গেছে। হামিদুল্লাহ সালমানের গায়ে হাফ হাতা শার্ট পরিহিত অবস্থায় ও সোহাগের গায়ে সাদা টি শার্ট ও চশমা পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়,  জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত অবস্থায় শামীমকে মারধর করছেন সাঈদ হোসেন ভুইয়া।
এসময় তার সাথে থাকা বাকিদের শনাক্তের চেষ্টা চলমান রয়েছে।
মারধরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে সাঈদ বলেন, কেউই হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে মারধর করে নি। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি দেখতে গিয়েছিলাম। আর একজন মানুষ যিনি হেঁটে পুলিশের গাড়িতে গেছে আর কিছুক্ষণের মধ্যে মারা গেছেন এর রহস্য উদঘাটন করা জরুরি।
এ বিষয়ে রাজু আহমেদ বলেন, ’আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে শোনার পর সেখানে গেছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি শামীমকে ধমক দিই, তাকে মারধর করিনি।’
রাজন হাসান বলেন, ’আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু মারার জন্য সেখানে যায়নি।যারা তালা ভাঙার চেষ্টা করছিল তাদের আমি নিষেধ করেছিলাম।’
এবিষয়ে হামিদুল্লাহ সালমান বলেন, ’আমি সন্ধ্যায় হলে ছিলাম। পরে খবর পেয়ে প্রক্টর অফিসে যায় কিন্তু শামীম মোল্লাকে মারধর করিনি।’
এবিষয়ে সোহাগ বলেন, ’আমি টিউশন থেকে ফেরার পথে হ‌ইচ‌ই দেখে সেখানে গেছিলাম কিন্তু মারধর করিনি।’
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক  রাশিদুল আলম বলেন, আমরা  এই বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে,  সুষ্ঠ তদন্ত শেষে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো
এর আগে, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষার্থীকে প্রান্তিক গেট এলাকায় দেখতে পেয়ে তাকে গণধোলাই দিতে চান।  খবর পেয়ে কিছু শিক্ষার্থী উপস্থিত হলে অন্যরা আরও বেশি উদ্যত হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা শামীমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে আসে। সাবেক শিক্ষার্থী হওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ প্রায় ৩ ঘন্টা পর প্রক্টর অফিসে আসে। এরইমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী চলে আসে। প্রক্টরিয়াল টিম কয়েকবার চেষ্টা করেও আটকাতে ব্যর্থ হয়।
পরে রাত সোয়া আটটার দিকে পুলিশ আসলে শামীমকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে জানা যায়, শামীম মারা গেছেন। যদিও পুলিশ বিষয়টি রাত বারোটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও গুলিতে তিনি মূল হোতা ছিলেন বলে জানা গেছে। এছাড়া বহিরাগত ভাড়া করে নেওয়াতেও তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।
এর আগে, মাদকসংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে একাধিকবার গুলি ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত তিনি। সাভার-আশুলিয়াতে  এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব ছিল তার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তার কর্মকান্ডের জন্য ৫ আগস্টের পর আশুলিয়া থানায় তার নামে ৪টি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.