মোঃ শরীফুল ইসলাম, বেরোবিঃ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে দ্রোহের গান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫ টায় স্বাধীনতা স্মারক মঞ্চে এ আয়োজন করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রঙ্গন শিল্পীগোষ্ঠী।
এ আয়োজনে মতিউল্যাহ মেছবাহ নাবিল, আমান উল্লাহ আমান, রেজোয়ানুল ইসলাম ও শিশু শিল্পী সাফির গান পরিবেশন করেন।
দ্রোহের গান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় উপস্থিত একাউন্টটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আহমাদুল্লাহ হক আলবির বলেন, শহীদদের স্মরণে ও ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে রঙ্গন শিল্পীগোষ্ঠীর এই দ্রোহের গান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন ছিলো বেরোবির বুকে প্রথম।
নিশ্চয় ইসলামি মূল্যবোধের এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের কে সুস্থ বিনোদনের দিকে ধাবিত করবে আশাকরি। এই আয়োজনে সাধারণ মানুষের অনেক উপস্থিতি প্রমাণ করে বেরোবির সাধারণ শিক্ষার্থী সুস্থ সংস্কৃতি সাদরে গ্রহন করতে আগ্রহী। তাই এই প্রোগ্রাম নিয়মিত আয়োজন করার প্রয়োজনবোধ করতেছি।
বহিরাগতদের মধ্যে আজকের আয়োজন দেখতে আসা আব্দুস সোবহান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দ্রোহের গান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আজকের এই আয়োজন যাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে করতে পারছি প্রথমেই সেই শহীদদের স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ সবাইকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান দান করুন। সেই সঙ্গে যারা আহত হয়েছেন, শ্রম দিয়েছেন সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও এরকম আয়োজন হোক সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমার এটাই প্রত্যাশা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিদ বিন রুহান বলেন, অনেকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় নিস্তব্ধতায় হয়ে গেয়েছিল ক্যাম্পাস। এ অনুষ্ঠান ক্যাম্পাসে প্রাণের সঞ্চার করেছে। দ্রোহের গান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অংশগ্রহণের জন্য স্বৈরাচার পতনের পর এই প্রথম ক্যাম্পাসে এসেছি। এ রকম আয়োজন আরও বেশি বেশি করা হোক।
উক্ত আয়োজন সম্পর্কে রঙ্গন শিল্পীগোষ্ঠীর বর্তমান পরিচালক আমান উল্লাহ আমান (ভারপ্রাপ্ত) দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস কে জানান, আপনারা সকলে অবগত আছেন যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুরের অন্যতম স্বনামধন্য শিল্পীগোষ্ঠী রঙ্গন শিল্পীগোষ্ঠী। এই শিল্পীগোষ্ঠী দীর্ঘদিন পরে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রথমবারের মতো একটি সুন্দর আয়োজন করতে পেরেছি। সব মিলিয়ে আয়োজন মোটামুটি ভালো হয়েছে তাছাড়া আমি পর্যবেক্ষণ করেছি যে আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এসেছিলেন; এছাড়াও বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর মানুষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই আয়োজন টি প্রাণবন্ত হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। আমরা দেখেছি যে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে জনগণের উপস্থিতি ছিল চোখজুড়ানোর মতো, এবং অসংখ্য মানুষ এখানে উপস্থিত হয়েছেন। আমরা এই আয়োজনের মাধ্যমে তরুণ ছাত্র সমাজের কাছে এই আহ্বান পৌঁছাতে চাইছে যে আগামীদিনের বাংলাদেশ হবে তারুণ্যের বাংলাদেশ, আগামীদিনের বাংলাদেশ হবে সুস্থ সংস্কৃতি বাংলাদেশ, আগামীদিনের বাংলাদেশে হবে ঐক্যের বাংলাদেশ। এছাড়া আমরা সুস্থ সংস্কৃতির নান্দনিক বিকাশে আমরা এই আয়োজনকে অব্যাহত রাখবো। আমরা আগামীদিনেও আরো সুন্দর সুন্দর আয়োজন উপহার দিতে চাই।
এছাড়াও তিনি আরো বলেন, রঙ্গন শিল্পীগোষ্ঠী একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এই সংগঠনে আবৃতি, কোরআন তেলাওয়াত, ইসলামিক গান, হামদ, নাত ও নাটক এর অন্তর্ভুক্ত।
অনুষ্ঠানে কাওয়ালী গান, দেশের গান, কবিতা আবৃত্তি, নাটিক, হামদ ও নাতের মাধ্যমে মেতে ওঠে প্রায় হাজারের অধিক শিক্ষার্থীরা।