নাইমুর রহমান, জবি: টানা বৃষ্টি, উজানের ঢল আর ভারত কর্তৃক ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় প্লাবিত হয়েছে দেশের ১২ জেলা। ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৫ লাখ মানুষ, এছাড়া মারা গেছেন ১৫ জন। এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছুটছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। নব গঠিত প্ল্যাটফর্ম ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন’ এর উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করা হয় ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকায়।
শনিবার (২৪ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, তাঁতীবাজার, শাঁখারী বাজার, স্বর্ণ পট্টি, বাংলাবাজার, কলতাবাজার, ইসলামপুর, সদরঘাট, ধূপখোলা, বানিয়া নগর, চকবাজার, নারিন্দা, সূত্রাপুর, নবাবপুর, শ্যামবাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক, ধোলাইখাল ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা প্রতিনিধি পাঠিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে কিছু ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে এসেছে, যা সেনাসদস্যরা তাদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার সময় বিতরণ করতে পারবেন। ফেনী জেলায় ছাত্র কল্যাণ সমিতির সহায়তায় ফেনীতে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। যেখানে রয়েছে ১২ সদস্যের একটি টিম।
গত দুই দিনে ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা সংগৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ লাখ টাকার ত্রাণ সামগ্রী ক্রয় ও বিতরণ খাতে খরচ করা হয়েছে। ত্রাণ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীরাসহ আশপাশের এলাকার মানুষজন বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য অর্থ, শুকনো খাবার ও কাপড় দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তার জন্য হেল্প ডেস্ক বসানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অর্থসহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন শুকনো খাবার, কাপড় নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
এছাড়া কিছুদিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং বন্যার পানি নেমে যাবে। তখন বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষদের চাউল, ডাউন, আলু সহ নৃত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বিতরণ এবং নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে তাদের ঘরবাড়ি মেরামতের সহায়তা করবেন শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ জানান, বন্যার পানি নেমে গেলে আমরা চাল, ডাল, আলু সহ সাধ্যমত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ এবং তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ঘরবাড়ি নিরামতের জন্য সহায়তা করার চেষ্টা করবো।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ” কিছু বিচ্ছিন্ন ত্রাণ বিতরণের ঘটনা ঘটেছে, এরপরে আমরা বিভাগগুলো সাথে যোগাযোগ করেছি। আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের বিষয়ে উৎসাহিত করছি। একটি বিভাগ যে পরিমাণ ত্রাণের টাকা সংগ্রহ করে, তার বেশির ভাগই যাতায়াতের ক্ষেত্রে খরচ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকায় টিম পাঠালে বিষয়টি আরো সুশৃঙ্খল ও সুন্দর হবে।