ইয়াসির আরাফাত: সম্প্রতি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেফমুবিপ্রবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে উপাচার্য, রেজিস্টার, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও হল প্রভোস্ট সহ অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। নেই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার মত কেউ। এতে শিক্ষা কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। এমন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক শর্ত জুড়ে দিয়ে দ্রুত সৎ ও যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
প্রশাসনের শীর্ষ পদ গুলো শূন্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে জটিলতা। এদিকে আইন অনুযায়ী যোগ্যতা না থাকায় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের মতও নেই কেউ।
উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৭ এর ১০ ধারার তিন উপধারায় বলা আছে ‘মেয়াদ শেষ হইবার কারণে ভাইস-চ্যান্সেলর পদটি শূন্য হইলে কিংবা ছুটি বা অন্য কোনো কারণে অনুপস্থিতির জন্য সাময়িকভাবে শূন্য হইলে কিংবা অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে ভাইস-চ্যান্সেলর তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে বা অপারগতা প্রকাশ করিলে শূন্য পদে নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা ভাইস-চ্যান্সেলর পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চ্যান্সেলরের ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত না থাকা সাপেক্ষে জ্যেষ্ঠ প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ভাইস-চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করিবেন, তবে জ্যেষ্ঠ প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের পদ শূন্য থাকিলে অপর ভাইস-চ্যান্সেলর এবং উভয় পদ শূন্য থাকিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠতম ডিন ভাইস-চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করিবেন।’
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৭ বছরে পা রাখলেও নেই কোন অধ্যাপক, নেই কোন ডিন। নেই উপ-উপাচার্যও। ফলে কেউ নিতে পারছে না ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব।
উপাচার্য না থাকায় বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করা শূন্য পদগুলোতেও নতুন কেউ দায়িত্ব নিতে পারছে না। আটকে পরতে হচ্ছে অনেক কিছুতেই। এতে প্রায় অচল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। দেখা দিয়েছে নিরাপত্তা হুমকি, সেশন জটের সম্ভাবনা সহ নানা সমস্যা।
এমন অবস্থায় অতি দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবি করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ, দেশের গবেষণায় শীর্ষ এবং ছাত্র-শিক্ষকবান্ধব একজন উপাচার্য চাই। যা দিতে হবে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এর বাহিরে অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ দিলে তাকে আমরা উপাচার্য হিসাবে গ্রহন করব না।
তারা আরো বলেন, ‘আমরা জানি দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই বর্তমানে এমন সমস্যা রয়েছে কিন্তু বাস্তবতায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাটি ভিন্ন ও জটিল। অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য সহ বিভিন্ন পদে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব নেওয়ার মত থাকলে আমাদের এখানে তা নেই। তাই নিয়োগ কর্তৃপক্ষের কাছে আামাদের চাওয়া ছোট বড় বা বিভিন্ন ক্যাটাগরির দৃষ্টিতে না দেখে আমাদের সমস্যাটির জন্য দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দিবেন।’