এমরান হোসেন তানিমঃ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে দেখা করে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ সহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১৩ দফা দাবি পেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা দাবিগুলো হলোঃ
০১। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাসে সকল ধরণের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি (ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী) নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অফিস আদেশ জারি করতে হবে।
০২। দ্রুত সময়ের ক্লাস, পরীক্ষা তারিখ ঘোষণা ও আবাসিক হলসমূহ খুলে দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।
০৩। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে রেজিস্ট্রার, প্রক্টর সহ প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক, পরিবহন পুলের প্রশাসক, ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক, শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালকে বদলি করতে হবে।
০৪। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ গঠন ও নির্বাচনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
০৫। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে মাসিক মতবিনিময় সভা করতে হবে।
০৬। মেডিকেল সেন্টারে ২৪ ঘন্টা জরুরি সেবা চালু ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে।
০৭। নামাজের বিরতি (যোহরের নামাজ) রেখে ক্লাস রুটিন প্রণয়ন এবং মসজিদে মেয়েদের নামাজের স্থান সংস্কার করতে হবে।
০৮। যে সকল বিভাগে এখনো সেশনজট বিদ্যমান, সে সকল বিভাগে সেশনজট নিরসনে প্রতি সেমিস্টার তিন (০৩) মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।
০৯। ক্লাস চলাকালীন বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
১০। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিজ্ঞাপন ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের মাধ্যমে দিতে হবে। যে সকল পত্রিকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নিয়োগ দিবে না, সে সকল পত্রিকায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
১১। ক্যাম্পাস থেকে রাতের শেষ বাস ছেড়ে যাওয়ার সময় অব্দি লাইব্রেরি ও ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখতে হবে।
১২। নির্মাণাধীন আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে চালু করতে হবে।
১৩। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাবর্তনের আয়োজন করতে হবে।
উপাচার্যের সাথে দেখা শেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, ‘আমরা আগামী ২৪ ঘন্টার ভেতরে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছি। ম্যাম এই কাজটি আমাদের দ্রুত করে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। একই সাথে আমরা আগামী ২৪ ঘন্টার ভেতরে রেজিস্ট্রার, প্রক্টর সহ প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক, পরিবহন পুলের প্রশাসক, ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক, শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালকে বদলি করার আল্টিমেটাম দিয়েছি। তবে উপাচার্য ম্যাম এখন প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক এবং পরিবহন পুলের প্রশাসককে পরিবর্তন করে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন এবং বাকীগুলো পর্যায়ক্রমে করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।’
শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ শেষে উপাচার্য বলেন, ‘আমি দাবিদাওয়াগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছি। তবে সবগুলো দাবি এক সাথে পূরণ করতে পারবোনা। পর্যায়ক্রমে দাবি দাওয়াগুলো পূরণ করতে চেষ্টা করবো।’