কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতা নিহতের প্রতিবাদসহ একদফা দাবি আদায়ে গতকাল সারা দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাজধানী ঢাকার শহিদ মিনার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানাতে উপস্থিত হন তারকা শিল্পী, ইনফ্লুয়েন্সার, ইউটিউবারসহ প্রায় নানা পেশার সর্বস্তরের মানুষ।
কিন্তু সেখানে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন আলোচিত ইউটিউবার ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’। রাফসানের সঙ্গে এমন আচরণ উচিত হয়নি বলেছেন অভিনেতা ও ইউটিউবার সালমান মুক্তাদির। বিভক্তির পথে না গিয়ে ভেদাভেদ ভুলে এক থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
রোববার এক ফেসবুক পোস্টে সালমান বলেন, ‘একটা যুদ্ধ জেতার আগেই যদি সবার প্রাইড, এগো আর এগ্রোগেন্স দিয়ে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাই, তাইলে জেতার পর তো নিজের ভাইয়ের মাংসও খেয়ে ফেলব আমরা। রাফসানকে যদি সুন্দর করে বলা যেত, যে কত আশা ওর ওপর মানুষের, রাফসান কী অনুপ্রাণিত হয়ে আরও হেল্প করত না?’
শিল্পীদের একটা অংশ যখন চলমান পরিস্থিতি শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংহতি জানাচ্ছে, তখন আরেকটি অংশ বিটিভি ভবনে পরিদর্শনে গিয়ে সরকারের পক্ষে আওয়াজ তুলেছে। এ ছাড়া তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কোনো প্রতিক্রিয়াও চোখে পড়েনি।
সালমানের বার্তা, রাফসান অন্তত তাদের মতো চুপ করে আর বসে থাকেনি। দেরিতে হলেও সে জনমতের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
সালমান আরও বলেন, ‘দেশকে পুরো বেচে দিয়ে নায়ক ফেরদৌস, রিয়াজের মতো টোকাইগুলো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সবার সামনে ভাষণ দিচ্ছেন— কেউ কিছু করতে পারল না?’
‘এ রকম করেই যদি আমরা আমাদের একতা প্রকাশ করি, তাহলে এক হওয়ার আহ্বান কাকে জানাচ্ছি? কাকে জড়ো হতে বলছি? কাকে আওয়াজ তুলতে বলছি?’- যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার শহিদ মিনারে সংহতি জানাতে গেলে আন্দোলনকারীরা তাড়িয়ে দেন ইফতেখার রাফসানকে। এ সময় আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সে এতদিন পর অ্যাটেনশন নিতে এসেছে। আমরা তার কাছে কৈফিয়ত চেয়েছি এতদিন পর কি করতে এসেছেন?’
এদিকে রোববার গভীর রাতে এক পোস্টে দেরিতে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোয় ক্ষমা চেয়েছেন ইফতেখার রাফসান।
রাফসান লেখেন, ‘আপনারা কেউ কেউ আমাকে গ্রহণ করেননি এবং আমি আপনাদের হতাশা বুঝতে পেরেছি। আমি যদি আপনাদের জায়গায় থাকতাম, আমিও সম্ভবত একই কাজ করতাম। তবে এই দেশটি আমার ঘর, আমি আবারও আন্দোলনে আসব।’