শিক্ষর্থীদের দাবির মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আপাতত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে তিনি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।
বুধবার বিকেল ৫টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তিনি এ ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের আরও দাবি ছিল হল ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের। তবে এই দাবি মানতে রাজি হননি উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রাবি শিক্ষার্থীরা দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে। বিকাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনার এক পর্যায়ে ক্যাম্পাসে ঘোষণা দেন উপাচার্য।
উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্তচিন্তার জায়গা। এখানে রাজনীতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক তবে ছাত্রদের দাবির বিষয়ে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। এছাড়াও সরকার থেকে আগামীকাল বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা আসছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে হল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। হল ত্যাগের নির্দেশনা বাতিল করতে হলে ইউজিসির সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা যারা আছেন তাদের অনুমতিতেই বলছি শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আপাতত ছাত্র রাজনীতি স্থগিত ঘোষণা করছি। এ বিষয়ে আজ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
এর আগে শিক্ষার্থীর দাবির মুখ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।
পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এদিন সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিয়ে সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন এবং হল প্রশাসনের কাছে আরও পাঁচ দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হলো— এক. বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে স্থায়ীভাবে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সিন্ডিকেট থেকে আজকেই তা পাশ করতে হবে। দুই. হল ত্যাগের নির্দেশনা আজ দুপুর দুইটার মধ্যে বাতিল করতে হবে। তিন. মেস মালিকদের চিঠি দিয়ে দ্রুত সময়ে মেস খোলার নির্দেশ দিতে হবে, চার. শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হলে দ্রুত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে, চলমান কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর যেন কোনো মামলা না হয় তা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ. আজকেই মিডিয়ার উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে অস্ত্র মুক্ত করতে হবে। প্রতিটি হলে নিয়মিতভাবে সিট বন্টনের দায়িত্ব হল প্রশাসনকে নিতে হবে, যেসব হলে অস্ত্র পাওয়া গেছে সেসব হল প্রভোস্টদের দ্রুত সময়ে পদত্যাগ করতে হবে।