The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪

২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাবিপ্রবি

মোঃ আয়নুল ইসলামঃ কাপ্তাই লেক ও সবুজ পাহাড়ে ঘেরা রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) ক্যাম্পাস যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি। শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিকতা থেকে দূরে অবস্থিত এ ক্যাম্পাস যেন প্রকৃতির কোলে গড়ে উঠা এক অপরূপ ও অনন্য নৈস্বর্গ। এ যেন প্রকৃতি আর মানব প্রাণের মেলবন্ধন। সবুজ বৃক্ষরাজির উপর উড়ন্ত বিচিত্র রঙের হরেক রকম পাখি, সবুজ পাহাড়ের কোলে থাকা দূর্লভ গাছপালার ক্যাম্পাস। কাপ্তাই লেক, সিঙ্গেল ব্রীজ, উঁচু উঁচু পাহাড়, প্রশাসনিক ভবন থেকে কেন্দ্রীয় মাঠ পর্যন্ত রাস্তা এবং কেন্দ্রীয় মাঠের চারপাশের মায়াবী সৌন্দর্য উপভোগ করলে জুড়িয়ে যায় প্রাণ।

ষড়ঋতুর পালাবদল হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায় রাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে। গ্রীষ্মের আগমনে প্রচন্ড গরম ও রুক্ষ প্রকৃতি। হঠাৎ সবুজ পাহাড় ঘিরে কালো মেঘের আনাগোনা আর কালবৈশাখী ঝড়, বর্ষার আগমনে প্রকৃতির সতেজতা লাভ, শরতের কাশফুল, হেমন্তের সোনালী ধান কিংবা ঋতুরাজ বসন্তের ফোঁটা ফুল সবই দেখা যায় রাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে।
রাঙ্গামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা মিনি বাস। ক্যাম্পাস শহর থেকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দুরে হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাসে যাতায়াত করে।যাতায়াতের সময় রাস্তার দু’পাশের সৌন্দর্য ত্যাক্ত বিরক্ত মন কেও ভালো করে তুলে।

২০০১ সালে ১১টি নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিল রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। জাতীয় সংসদে ২০০১ সালের ১৫ই জুলাই রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। তাই পথচলার পর থেকেই ১৫ই জুলাইকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করে আসছে রাবিপ্রবি প্রশাসন। বিভিন্ন বাধার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। তবে রাবিপ্রবি ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। শুরুতে রাঙামাটি শহরের শাহ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে দুটি রুম ভাড়া করে পাঠদান শুরু হয়েছিল।
রাঙামাটির ঝগড়াবিল এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য প্রায় ৬৪ একর জমির ওপর ২০১৬ সালে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। প্রায় ৫ বছর পর, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু হয়। এসব ভবনে ২০১৯ সাল থেকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে ৩টি অনুষদের অধীনে ৫টি বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ৮৯০ জনের বিপরীতে শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ৩০ জন।বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সংকট পেরিয়ে একটু একটু করে এগোচ্ছে রাবিপ্রবি। গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কিছু উন্নতি সাধন করেছে। শিক্ষার্থীরা পেয়েছে একটি খেলার মাঠ, তৈরি করা হয়েছে নতুন কিছু রাস্তা। একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের বেশকিছু কাজ চলমান। রাবিপ্রবি কে সমৃদ্ধ করতে দেশের বাহিরে গবেষণায় মনোযোগী একঝাঁক শিক্ষক চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের গবেষণা কার্যক্রম।

এছাড়াও শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে অবদান রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশব্যাপী। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সাংবাদিকতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিচ্ছে একদল শিক্ষার্থী,সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা NCPC ইভেন্টে ও চুয়েটে প্রোগ্রামিং কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করে  সিন্যাপস র‍্যাংকিং এ এগিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এবং সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুনাম বাড়িয়েছে রাবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটির সদস্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমি আমার প্রানপ্রিয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শুভেচ্ছা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় সবার প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সাবেক শিক্ষার্থী মেধার সাক্ষর রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ পদে কর্মরত আছে। সেই সাথে আগামীর টেকসই ও উন্নত রাবিপ্রবি গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.