বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ সারা বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে টানা চার দিন ধরে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় বাতিল এবং কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। চতুর্থ দিনে এসে বিক্ষোভ মিছিল ও জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
বুধবার (১০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলিত হন শিক্ষার্থীরা। এর পর ১১টায় এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট হয়ে গোবিন্দগঞ্জ বাজারে এসে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় তারা প্রায় ২ ঘণ্টা মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখে তবে রোগী, এম্বুলেন্স ও ডিগ্রি পরীক্ষার্থীদের গাড়ি যেতে দিয়েছে। তাদের এ অবরোধের কারনে রাস্তার দুই পাশে দীর্ঘ গাড়ীর লাইন দেখা যায়।
অবরোধের সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার এবং ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘১৮ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দিবো রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’ এমন অনেক কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তারিফুল ইসলাম শরীফ বলেন, ‘একটি শিক্ষার্থীর বাবা-মার বড় স্বপ্ন থাকে ছেলে মেয়ে লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটি চাকরি করবে কিন্তু হাইকোর্টের যে রায় দিয়েছে তাতে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা খুবই ব্যথিত। তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং কোটা সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী আবু সায়েম বলেন, ‘আমাদের মেধার কোন মূল্যায়ন হচ্ছে না এই কোটার জন্য। আমরা আমাদের মেধার যে স্বাক্ষর রাখবো সেই সুযোগটা কই? আমরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করি তারা যে বৈষম্য দূর করে স্বাধীনতার অর্জন করেছিলেন সেই স্বাধীনতা অসমতা ধরে রাখার জন্যই আমাদের এ আন্দোলন । সুতরাং বলতে চাই দেশকে ঘুরতে হলে মেধাবীদের প্রয়োজন তাই কোঠা সংস্করণ করে লেনিন না হলে আমাদের বাংলা ব্লকেড চলবেই।’
আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলেন, বৈষম্যমূলক কোটার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এর আগেও সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। যে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই বৈষম্য আমরা মেনে নেব না। আমরা কোটার সংস্কার চাই।
ইয়াসির আরাফাত./