নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৪ বছর আগে নিখোঁজ হন নান্দাইল উপজেলার তরুণ মো. নুরুজ্জামান। নিখোঁজের সময় তাঁর বয়স ছিল ২৮ বছর। পরিবার সূত্রে জানা যায়, এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি নুরুজ্জামানের।
এতদিন পর নিখোঁজ ওই যুবকের মরদেহের সন্ধানে মাটি খুঁড়েছে করে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ। রবিবার (৩০ জুন) বিকেল থেকে রাত ১০ পর্যন্ত স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে চলে খুঁড়াখুঁড়ির কাজ। কিন্তু মেলেনি ওই যুবকের মরদেহের কোন হদিস। গতকাল সোমবার দুপুরে ভেকু মেশিন দিয়ে পুনরায় মাটি খুঁড়তে শুরু করে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ। এদিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা খুঁড়াখুঁড়ি করেও মেলেনি নিখোঁজ ওই যুবকের লাশের কোন চিহ্ন।
লাশের সন্ধানে মাটি খোঁড়া হয় নিখোঁজের বড় ভাই আনিসুর রহমানের শ্যালক শরিফুল ইসলামের বাড়িতে। শরিফুল ইসলামের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের রাজিবপুর ইউনিয়নের উমনাথপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শরিফুল ইসলাম বর্তমানে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি।
নিখোঁজ নুরুজ্জামানের বড় ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আনিসুর রহমান বলেন, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসের ৮ তারিখ আমার শ্যালক শরিফুল ইসলামের সাথে মোবাইলে কথা বলে বাড়ি থেকে উচাখিলার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে উচাখিলা বাজারে আসে। তারপর থেকে আমার ভাই আর বাড়িতে ফেরত যায়নি। এরপর অনেক খুঁজাখুঁজির পরও আজ পর্যন্ত আমার ভাইয়ের কোন সন্ধান পাইনি। নিখোঁজের সময় থানায় একটি জিডিও করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আমার শ্যালক শরিফুল ইসলাম কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে আমার বড়ভাইয়ের কাছে বলেছে- আমার নিখোঁজ ভাই নুরুজ্জামানকে তারা নাকি তার বাড়ির সামনে পুকুর পাড়ের মাটিতে গর্ত করে পুতে রেখেছে। সেই মোতাবেক পুলিশ দুইদিন ধরে মাটি খোঁড়া শুরু করেছে, এখনও মাটি খোঁড়ার কাজ চলমান আছে। আমরাও চাই যেহেতু আমার ভাই বাড়ি থেকে বের হবার ১৪ বছর ধরে নিখোঁজ। সেই ঘটনার সঠিক রহস্য উদঘাটন হোক।
এদিকে ১৪ বছর পর নিখোঁজ ওই যুবকের মরদেহের সন্ধানে মাটি খোঁড়াকে কেন্দ্র এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মাটি খোঁড়া দেখতে আশেপাশের কয়েক গ্রামের শতশত মানুষ ভিড় জমায় শরিফুল ইসলামের বাড়িতে।
এ প্রসঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, এবিষয়ে থানায় করা একটি জিডির প্রেক্ষিতে রাজিবপুর ইউনিয়নের উমনাথপুর গ্রামে দুইদিন যাবত মাটি খোঁড়ার পরও নিখোঁজ ওই ব্যক্তির মরদেহের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরিপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়া বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়া ওই ব্যক্তির ঘটনায় ২০১০ সালে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল এবং এবিষয়ে একটি অভিযোগও আছে। রহস্যময় এই ঘটনার সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য তদন্তের স্বার্থে মাটি খোঁড়া হয়েছে। কিন্তু এখনও লাশের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান আছে।’