সোহানা চৌধুরীঃ প্রকৃতি মানব জীবনের সাথে ওতপ্রোতভবে জড়িত।প্রকৃতি ছাড়া মানুষের জীবন অকল্পনীয়।যদি প্রকৃতি সুন্দর ও বিশুদ্ধ হয় তবেই মানুষ পৃথিবীতে বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারবে।প্রতিবছর ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়।
২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘Land restoration, desertification and drought resilience’। অর্থাৎ, ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা/ অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা’। এ বছর ৫২তম বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
৫ ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হলেও আমরা আমাদের পরিবেশকে আদৌও আমাদের বাসোপযোগী করতে পেরেছি কিনা প্রশ্ন উঠে এই জায়গায়। নগরায়ণ, শিল্পায়ন, পর্যাপ্ত গাছ না লাগিয়ে নিজেদের মুনাফা লাভের জন্য গাছ কেটে ফেলার ফলে দিন দিন প্রকৃতি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বৃক্ষ কিংবা গাছ। বৃক্ষকে বলা হয় মানুষের পরম বন্ধু। আমাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন বৃক্ষ সরবরাহ করে এবং মানুষের ত্যাগ করা দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃক্ষ গ্রহণ করে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত রাখতে অবদান রাখে। অধিক জনসংখ্যার চাপে বন উজাড় করে তৈরি করছি বাসস্থান। ফলে বনায়ন দিন দিন কমে যাওয়ায় আমরা এবছর দেখতে পাই পৃথিবী অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে যাচ্ছে, বৃষ্টি হচ্ছে না সময়মত।
এই অতিরিক্ত তাপের ফলে বার বার জারি করতে হচ্ছে হিট অ্যালার্ট।অত্যাধিক তাপমাত্রায় অসুস্থ হচ্ছে মানুষ। একটি পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায় যে, যেখানে গাছের নিচে তাপমাত্রা ৩৬° অনূভুত হচ্ছে ঠিক একই পরিবেশে গাছের বাহিরে ৪০° এর অধিক তাপমাত্রা অনূভুত হয়।
এ থেকে বুঝা যায় পৃথিবীতে গাছের ভূমিকা কতটুকু।পৃথিবীর অতিরিক্ত উত্তাপের কারনে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে বাড়ছে ভূপৃষ্ঠে পানির উচ্চতা। যার ফলে সময়ের সাথে সাথে পৃথিবীর নিন্ম অঞ্চলগুলোও পানির নিচে তলিয়ে যাবে,যদিনা আমরা পৃথিবীর উত্তাপকে নিয়ন্ত্রনে না আনি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ দিন দিন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার, কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, শিল্প-কলকারখানাগুলো কালো ধোয়া উৎপাদন করছে যার ফলে পৃথিবীর ওজোন স্তরের ক্ষয় হচ্ছে, এসিড বৃষ্টিসহ নানা বিপর্যয় পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রকৃতিকে জয় করতে যেয়ে পরিবেশকে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
পরিবেশই আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন। পরিবেশকে বাচাঁনো শুধু সরকারের একার দায়িত্ব নয়। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে পরিবেশকে বাচাঁতে।আসুন পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হই, অন্যকেও সচেতন করে তুলি। পৃথিবীটাতে বাসযোগ্য করে তুলি, ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করি।
লেখক: শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।