ইবি প্রতিনিধি :পবিত্র ঈদ-উল-আযহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবিতে আন্দোলন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।
সোমবার (৩ জুন) দুপুর ২ টার বাস ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার সময় হলে মেইন গেইটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় হল গেইটের সামনে শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসের লম্বা লাইন সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ঘণ্টা খানেক পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎকারের আশ্বাস দিয়ে গেইটের তালা খুলে দেয়া হয়।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ’র উপস্থিতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেন।
এতে বলা হয়,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ৬ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত মোট ২৩ দিন গ্রীষ্মকালীন ও পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ছুটি থাকবে। উক্ত ছুটির মধ্যে আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকবে ১০ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত মোট ১৪ দিন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। নির্দিষ্ট ধর্মীয় এসব ছুটিতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী অনেক শিক্ষার্থীর বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয় এবং দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
সে সময় প্রভোস্ট কাউন্সিলে আলোচনা করবেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ।
এর আগে, গত ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে আগামী ১০ জুন সকাল ১০ টা থেকে ২৪ জুন সকাল ১০ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল সমূহ বন্ধ থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের ১০ জুন সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, অনেকের বিজেএস এর প্রিলি হয়েছে সামনে রিটেন পরীক্ষা। তাছাড়া অনেকেই বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই ওনাদের জন্য এই লম্বা ছুটি ক্ষতির কারণ। অনেক চাকরি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই প্রভোস্ট কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করে ভিসি স্যার এই ছুটি কমিয়ে আনে যেনো সেই দাবী আমাদের সকলের পক্ষ থেকে।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত হয় ১১ তারিখ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত হল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এখন শিক্ষার্থীদের দাবীর বিষয়টি আমাকে ছাত্র উপদেষ্টা অবগত করেছেন। এখন যদি প্রশাসন থেকে আমাদের চিঠি দেয়া হয় তাহলে বিষয়টি নিয়ে একসাথে বসে কি সিদ্ধান্ত নিবো।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম জানান, ক্যাম্পাস এবং হল নিজস্ব নিয়ম এবং শিডিউল মেনে চলে। বছরের শুরুতেই একাডেমিক ক্যালেন্ডার দিয়ে দেওয়া হয়েছে। হল বন্ধের ব্যাপারটাও পূর্বনির্ধারিত। ছুটির সিদ্ধান্তের রেজুলেশনও হয়ে গেছে। আমি চাইলেই নিয়মবহির্ভূত ভাবে কিছু করতে পারবো না। এবিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টাকে বলেছি প্রভোস্ট কাউন্সিলের সাথে যোগাযোগ করতে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।