বাকৃবি প্রতিনিধিঃ আগামী পহেলা জুন (শনিবার) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দশম বারের মতো উদযাপিত হবে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুরুত্ব বিশে্বর মানুষের কাছে তুলে ধরা এবং দুধ উৎপাদনের ব্যাপারে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করে ডেয়রি শিল্পের প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপন করা হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবস্থিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের মোট প্রায় ১হাজার ৬শত শিশুকে দুধ পান করানো হবে। পাশাপাশি বর্ণাঢ্য র্যালি ও পরে আলোচনা সভারও আয়োজন করা হবে।
বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসকল কথা বলেন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল রানা সিদ্দিকী। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী অনুষদের সভাকক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ড. সোহেল রানা সিদ্দিকী আরও বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর ১৪ দশমিক ০৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়, যেখানে দুধের চাহিদা ১৫ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন। একজন ব্যক্তির দৈনিক দুধের চাহিদা ২৫০ মিলিলিটারে বিপরীতে দেশের মানুষের গড় প্রাপ্যতা ২২১ দশমিক ৮৯ মিলিলিটার। যা পাশ্ববর্তী অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। তাই দুধের ঘাটতি পূরণে প্রতিবছর প্রায় চার হাজার কোটি টাকার গুঁড়া দুধ আমদানি করতে হয়। আবার দেশে দুধের উৎপাদন যতটুকু আছে সেটুকুও গ্রাহক এবং শিল্প পর্যায়ে সঠিকভাবে পৌঁছায় না। তাই দুধের সঠিক সরবরাহের ক্ষেত্রে খামারী পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে সকলের কাছে দুধের পুষ্টি পৌছে দেওয়ার লক্ষেই বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের এবারের আয়োজন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর পহেলা জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বিশে্বর মানসম্পন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করাতে ডেয়রি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ ।
বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বয়ক ও ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মাসুম, ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হান হাবিব, এবং সহকারী অধ্যাপক মো. সাদাকাতুল বারি প্রমুখ।
এসময় ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হান হাবিব বলেন, সুষম খাদ্যের পাশাপাশি দুধকে পথ্য হিসেবেও গণ্য করা হয়। দেহের পুষ্টিসাধনের পাশাপাশি মস্তিষ্কের ক্ষয়রোধ, হাড়ের গঠন ও ক্ষয়রোধে গুরুত্বপূর্ণ পথ্য হলো দুধ। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো আমাদের মধ্যে দুধ পানের অভ্যাস কমে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হলো সচেতনতার অভাব। পাশাপাশি ভালো জাতের দুধেল গাভীর অভাব, গো-খাদ্যের স্বল্পতা, গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও বাজারজাতকরণ সমস্যার জন্য খামারিরা হিমশিম খাচ্ছে।
এসময় ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, দুধ প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ খাদ্য। দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম ও মাংস বেশি খেলে ভাতের ওপর চাপ কমে আসবে। পুষ্টি সমৃদ্ধ স্বয়ংসম্পূর্ণ আদর্শ খাদ্য হিসেবে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি ও বেশি বেশি দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে সচেতনতা বৃদ্ধিই এবারের দুগ্ধ দিবসের উদ্দেশ্য।