দেশে ফিরেছেন সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট ও লোৎস বিজয়ী বাবর আলী। মঙ্গলবার (২৮শে মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে চট্টগ্রামে শাহআমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি পৌঁছান। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে তাকে সংবর্ধনা দেন তার (বাবরের) ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সসহ অসংখ্য ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষী।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নেমে বাবর আলী সাংবাদিকদের বলেন, দেশে ফিরে আমার খুব ভালো লাগছে। এভারেস্ট জয় করা মানেই হচ্ছে দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা। বাংলাদেশি হিসেবে গর্ববোধ করছি।
এভারেস্ট ও লোৎসে কোন বিষয়টি আপনার কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বাবর আলী গণমাধ্যমকে বলেন, এভারেস্ট থেকে নামার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তবে আত্মবিশ্বাস ছিল এভারেস্ট ও লোৎসের চূড়ায় পৌঁছানোর পর নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে পারবো। অবশেষে তা পেরেছি।
মঙ্গলবার নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকালে আসার পর রাতে চট্টগ্রামে পৌঁছান বাবর।
গত ১লা এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে নেপালের উদ্দেশে রওনা দেন বাবর। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে ৪ঠা এপ্রিল কাঠমান্ডু থেকে উড়ে যান লুকলা বিমানবন্দরে। এরপর পথচলা শুরু করেন এভারেস্ট বেসক্যাম্পের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছান ১০ই এপ্রিল।
ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এভারেস্ট অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এজন্য একাধিকবার উচ্চতায় ওঠানামা করেছেন। ২৬শে এপ্রিল বেসক্যাম্প থেকে এভারেস্টের ক্যাম্প–২ পর্যন্ত ঘুরে এসে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর্ব সমাপ্ত করেন। এরপর অনুকূল আবহাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। ১৪ই মে মাঝরাতে বেসক্যাম্প থেকে চূড়া অভিমুখে যাত্রা শুরু হয়। ১৫ই মে সকালে পৌঁছে যান ক্যাম্প ২-এ। সেখানে দুই রাত কাটিয়ে উঠে যান ক্যাম্প ৩-এ। সেখান থেকে ১৮ই মে পৌঁছান ক্যাম্প ৪-এ। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতার এই ক্যাম্পের ওপরের অংশকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’। ১৮ই মে মাঝরাতে আবারও শুরু হয় যাত্রা। ১৯শে মে ভোরে ২৯ হাজার ৩১ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে ওড়ান বাংলাদেশের পতাকা।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় উঠার দুই দিন পর লোৎসে পর্বতে (৮ হাজার ৫১৬ মিটার) ওঠেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। ২১শে মে নেপালের সময় সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৬টা ৫ মিনিট) বাবর লোৎসে পর্বতচূড়ায় পা রাখেন। নেপালের স্নোয়ি হরাইজন নামের ট্রেকিং ও পর্বতাভিযান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে এভারেস্ট ও লোৎসে অভিযানে যান চট্টগ্রামের এই কৃতীসন্তান।