রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে ৫ মিনিট কাজের বিনিময়ে ১৫০-২০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে। এদিকে নজর নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দোকানীরা নিজেদের ইচ্ছে মতো ব্যবসা করছেন। যার কাছ থেকে যেমন পারছেন, বাড়তি দাম রাখছেন। ২ মিনিটের কাজের জন্য ১৫০-২০০ টাকা দাবি করছেন তারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এদিকে, ভর্তির টাকা রকেট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকের রকেট অ্যাকাউন্ট না থাকায় তাদেরকে বিভিন্ন ফটোকপি ও কম্পিউটার দোকানে যেতে হচ্ছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে দোকানিরা।
প্রতিবছর ভর্তির সময় রিকশা ভাড়া থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বেড়ে যায় ক্যাম্পাসে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ভর্তি পরিক্ষার সময় রিক্সাভাড়া নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে। ভর্তি হতে এসে আবারো সেই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা।
যশোর থেকে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী বুলবুল বলেন, যে কাজ আমাদের এলাকায় করতে ২০-৩০টাকা লাগে, সে কাজ করতে ২০০ টাকা দিতে হলো আমাকে। কালার প্রিন্ট ৫ টাকা করে হলেও, এখানে ১০টাকা করে রাখছে তারা। এ নিয়ে কিছু বললে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে দোকানদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের দোকানে এত দাম হবে আগে জানলে বাইরে থেকে করে আনতাম।
ঐ শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমরা গরীব মানুষ, ভর্তির জন্য এতো টাকা লাগছে, তারপর আবার এখানে ২০০ টাকা বেশি দিতে হলো। আমি শুনেছিলাম ভর্তির সময় সবকিছুর দাম একটু বেশি তাই বলে এতো বেশি ভাবিনি। এটা আসলে অমানবিক। ভর্তির সময় আসলেই যেন তাদের ইদ লাগে।
খুলনা থেকে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী রামিম বলেন, আমি কয়েকটা দোকানে গেলাম, সব দোকানে একই কথা বলছে। আমি ক্যাম্পাসে এসে কাগজপত্রের কাজগুলো করবো ভেবেছিলাম। এমন হবে জানলে বাসা থেকে করে আনতাম। রকেটের মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য তারা ২০০ টাকা দাবি করছে। এখন বাধ্য হয়ে আমাকে এখান থেকে করতে হচ্ছে। টাকা বেশি লাগলেও কিছু করার নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেটসহ অধিকাংশ দোকানে চড়া মূল্য রাখা হচ্ছে।কোথায় ১৫০ আবার কোথায় ২০০ টাকা রাখা হচ্ছে।
কেন এত দাম রাখছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, সব দোকানে এমন নিচ্ছে তাই আমরাও নিচ্ছি। এমনকি একজন দোকানদার বলেন যে, এখান থেকে বের হয়ে চাকরিতে ঢুকলে আপনারা তো ঠিকই ঘুষ নিবেন আমরা একটু বেশি নিলে সমস্যা কি? লাখ টাকার জিনিসপত্র কিনে দোকান দিয়েছি, টাকা তো তোলা লাগবে। আমরা এখানে ইনভেস্ট করছি তাই লাভ নিচ্ছি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে সঠিক তথ্য প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।