শূন্য পদের বিপরীতে ৬-৮ গুণ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ প্রদানের জন্য ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পক্ষে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
গত ১৫ মে (বুধবার) পিএসসির চেয়ারম্যান বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পক্ষে ১০ জনে নাম উল্লেখ করা হয়।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, আমরা ৪৬ তম বিসিএস পরীক্ষার্থী। গত ৯ মে, ২০২৪ ইং তারিখে ৪৬ তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় এবং ৩১৪০ টি পদের বিপরীতে মাত্র ১০,৬৩৮ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয় যা মোট শূন্য পদের মাত্র ৩.৪ গুণ ।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ২০০ টি প্রশ্নের মধ্যে ১০ টি প্রশ্নে সঠিক উত্তর না থাকা, দ্বৈত উত্তর, বানান ভুল জনিত সমস্যা ছিলো। গণিত ও মানসিক দক্ষতার প্রশ্নে সঠিক উত্তর না থাকায় অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে সেই প্রশ্নে সময় ক্ষেপণ করে অনেক পরীক্ষার্থীই তাদের আশানুরূপ পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে এর দায় পিএসসি এড়াতে পারে না। শূন্য পদ পূরণের নিমিত্তে বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় শূন্য পদের মাত্র ৩.৪ গুণ পাশ করানোর কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদ শূন্য রয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অতীতে শূন্যপদের বিপরীতে ১০ গুন পরীক্ষার্থী কে সুযোগ দেয়ার ইতিহাস থাকা স্বত্তেও এবার ভুল প্রশ্নে মাত্র ৩.৪ গুন কে সুযোগ দেয়াটা বেকারদের সাথে এক ধরনের প্রহসন ই বলা যায়!
পিএসসি-র এক বছরে বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করার উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে পাশ করিয়েও এক বছরে বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। একজন পরীক্ষার্থী ৭০০ টাকা দিয়ে আবেদন করে। এবছর প্রায় ৩,৩৫,৬০৮ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছে। সে হিসেবে পিএসসি বেকারদের থেকে নিয়েছে ২২,৭৯,২৫,৬০০ টাকা।এই টাকা দিয়ে পিএসসির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করার জন্য অধিক মূল্যায়নকারী নিয়োগ দিয়েও এক বছরে বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, যদি কমসংখ্যক পাশ করাতেই হয় তবে অন্যদের থেকে শুধু প্রিলিমিনারির টাকা নেয়া হোক। যারা পরবর্তী ধাপে অংশগ্রহন করবে তারা সেই ধাপের জন্য টাকা পরিশোধ করবে। নইলে প্রতিবছর বিসিএসের নামে কোটি কোটি টাকা নিয়ে নিচ্ছে পিএসসি।
লিখিত এবং ভাইভা পরীক্ষাই বিসিএস পরীক্ষার মূল পরীক্ষা যেখানে প্রকৃত অর্থে মেধার মূল্যায়ন করা সম্ভব। স্মরণ কালের সর্বাধিক ভুল প্রশ্নের পরীক্ষায় অতি নগণ্য সংখ্যক প্রার্থীকে মূল বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ প্রদানে ৪৬ তম বিসিএস পরীক্ষার্থীরা হতাশ ও বাকরুদ্ধ। প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষায় এত কম সংখ্যক পরীক্ষার্থী পাশ করানোর কারণে প্রথমবারের মত যারা বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছে তারা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়েছে এবং একজন প্রার্থীর একাধিক বিসিএস পরীক্ষায় ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যা সুস্পষ্টভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করছে।
পিএসসি চাকুরী প্রার্থীদের আস্থার প্রতিষ্ঠান। পিএসসির কাছ থেকে চাকুরী প্রার্থীরা বেকার বান্ধব সিদ্ধান্ত আশা করে। সুতরাং উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনাপূর্বক ৪৬ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করে শূন্য পদের ৬-৮ গুণ পরীক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ প্রদানের জন্য আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।