বাকৃবি প্রতিনিধিঃ বিশ্বের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক আঞ্চলিক ও বিষয়ভিত্তিক র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য র্যাংকিং হলো টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিং (টিএইচই)। টিএইচই এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (আঞ্চলিক) র্যাংকিং-২০২৪ এ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অবস্থান ৩৫১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে। এ র্যাংকিংয়ে ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিলো ৪০১ থেকে ৫০০ এর মধ্যে।
২০২৪ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট প্রাপ্ত স্কোর ৩১ দশমিক ৮ যা ২০২৩ সালে ছিলো প্রায় ২৪। অর্থাৎ অবস্থান ও স্কোর দুই ক্ষেত্রেই অনেক এগিয়েছে বাকৃবি।
টিএইচই এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং-২০২৪ এ অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাকৃবির অবস্থান যৌথভাবে দ্বিতীয় (নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানও ৩৫১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে)। এছাড়া এবছর দেশের মোট ৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় টিএইচই এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং-২০২৪ এ স্থান করে নিয়েছে।
৩ মে (শুক্রবার) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলে (আইকিউএসি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসকল কথা বলেন আইকিউএসি-এর পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকবৃন্দ।
আইকিউএসিয়ের অফিসে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইকিউএসিয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. সুকুমার সাহা, আইকিউএসিয়ের র্যাংকিং কমিটির বিশেষজ্ঞ সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাহিদ সাত্তার এবং অধ্যাপক ড. জাহান আরা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এশিয়ার ৩১ টি দেশের মোট ৭৩৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় টিএইচই আঞ্চলিক র্যাংকিং-২০২৪ এ স্থান পেয়েছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাকৃবি ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ) যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। অন্যদিকে যৌথভাবে ১ম অবস্থান অর্জন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এখানে সবার মাঝে একটি ভুল ধারণা রয়েছে, র্যাংকিংয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আগে দেওয়া সে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোরও বেশি এমনটিই মনে করেন অধিকাংশরা। তবে টিএইচইয়ের নিয়মানুযায়ী যে কোনো র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামগুলো দেওয়া হয় ইংরেজি বর্ণক্রম অনুযায়ী। সেকারণে জাবির (জে) আগে বুয়েটের (বি) নাম এসেছে এবং এনএসইউয়ের (এন) আগে বাকৃবির (বি) নাম এসেছে। তবে প্রকৃতপক্ষে স্কোর অনুযায়ী দেশে ১ম, ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ অবস্থান অর্জন করেছে যথাক্রমে জাবি, বুয়েট, এনএসইউ এবং বাকৃবি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আইকিউএসিয়ের অন্যান্য সদস্যরা বলেন, শিক্ষাদান, গবেষণার মান, গবেষণার পরিবেশ, ইন্ডাস্ট্রির সাথে সংযোগ এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিয়ের ওপর মোট ১৮ টি নির্দেশকের প্রাপ্ত স্কোরের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা দেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় স্থান পেতে হলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিগত পাঁচ বছরে কমপক্ষে এক হাজার এবং প্রতি বছরে কমপক্ষে ১৫০ টি প্রবন্ধ স্কোপাস ইন্ডেক্সে প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি টিএইচই ডেটা পোর্টালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল তথ্যাদি প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। বাকৃবি ২০২২ সাল থেকে টিএইচই র্যাংকিংয়ে তালিকাভুক্ত হয়ে আসছে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরই আঞ্চলিক পর্যায়ের র্যাংকিংয়ে স্কোর বৃদ্ধি করে এগিয়েছে বাকৃবি।
এ বিষয়ে বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, বাকৃবি র্যাংকিংয়ে এগিয়ে চলেছে এটি আমারে গর্বের বিষয়। তবে আমাদের আরও আগানোর সুযোগ রয়েছে। বাকৃবির অধিকাংশ শিক্ষক বিদেশের সুনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাই তাঁরা চাইলেই ভালো গবেষণা, শিক্ষাদান এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিও মাধ্যমে র্যাংকিংয়ে ভালো অবস্থান অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে আমাদের ২টি প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো শিক্ষাখাতে বাজেট স্বল্পতা এবং গবেষণার পরিবেশ সর্বদা এক না থাকা। এ দুটো বিষয়ের উন্নতি করতে পারলে র্যাংকিংয়ে বাকৃবি সবার চেয়ে এগিয়ে যাবে।