নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের মার্চে অধ্যাপক মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। দায়িত্ব পেওয়ার দুই দিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টি পদে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাপক বদরুজ্জামান উপাচার্য হওয়ার পর এটিই ছিল তাঁর প্রথম নিয়োগ কার্যক্রম। কিন্তু এই কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সহযোগী অধ্যাপকের দুটি পদে উপাচার্যের আস্থাভাজন অভ্যন্তরীণ দুই সহকারী অধ্যাপকের নিয়োগ কৌশলে প্রায় চূড়ান্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবেদ প্রক্রিয়াই সংক্ষুব্ধ এক আবেদনকারী ববি উপাচার্যের নামে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন।
এ প্রক্রিয়াকে বাধামুক্ত করতে সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়নি পিএইচডি ডিগ্রিধারী দুই আবেদনকারীকে। এতে বঞ্চিত এক প্রার্থী ক্ষুব্ধ হয়ে আইনি নোটিশ দিলে বেকায়দায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল রোববার আগের নিয়োগ বোর্ড বাতিল করে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ পদে আবেদনের শেষ দিন ছিল ২১ মার্চ। কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ২১টি বিভাগের ৩২টি পদের বিপরীতে কেবল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুটি সহযোগী অধ্যাপক পদে ৩ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড বসায়। এক দিনের সময় দিয়ে ১ এপ্রিল হোয়াটসঅ্যাপে সাক্ষাৎকারপত্র পাঠানো হয়। ওই পদে আবেদনকারী ছিলেন চারজন। ববির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুম সিকদারসহ দু’জনকে সাক্ষাতের জন্য ডেকে তাদের সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এতে ক্ষুব্ধ আবেদনকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ ববি উপাচার্যকে আইনি নোটিশ দেন। তিনি নিয়োগ বোর্ড পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
আবু সালেহ আইনি নোটিশে উল্লেখ করেন, চার আবেদনকারীর মধ্যে তিনি এবং ড. মাহবুবুর রহমানই কেবল পিএইচডি ডিগ্রিধারী। এ দু’জনের সাক্ষাৎকারপত্র ইস্যু না করে অস্বাভাবিক দ্রুততায় ৩ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড বসে। নিয়ম ভেঙে কেবল অভ্যন্তরীণ দুই প্রার্থীকে নিয়ে বোর্ড সভা হয়। সভায় নিয়োগের সুপারিশ করা হয় ববির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুম সিকদারসহ দু’জনকে। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রিধারী ছাড়া অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগ হয় না। তিনি মনে করেন, অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে কৌশলে নিয়োগ দিতেই পরিকল্পিতভাবে পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারপত্র দেওয়া হয়নি।
রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, আবেদনকারী আবু সালেহকে হোয়াটসঅ্যাপে সাক্ষাৎকারপত্র পাঠানো হয়েছিল। তিনি বোর্ডে হাজির হননি। আবু সালেহ পুনরায় বোর্ড বসানোর দাবি করে গত ২৩ এপ্রিল আইনি নোটিশ দেন। এর পরদিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য।
তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রোববার আগের নিয়োগ বোর্ড বাতিল করে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ বোর্ডের সভা হবে আগামী ৫ মে।
উপাচার্য অধ্যাপক বদরুজ্জামান বলেন, নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সব প্রার্থীর সাক্ষাৎকারপত্রও নিশ্চিত করা হচ্ছে।