The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪

পরিবার উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় বদলে যাচ্ছে ভোলার কৃষকদের জীবন

সাব্বির হোসেনঃ ভোলার চরফ্যাশনে পরিবার উন্নয়ন সংস্থা’র (এফডিএ) সহযোগিতায় দিন দিন উন্নত হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের জীবনমান। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর কারিগরি সহযোগিতা ও অর্থায়নে এবং পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) কর্তৃক বাস্তবায়িত সমন্বিত কৃষি ইউনিট (কৃষি খাত) এর আওতায় চরফ্যাশন উপজেলায় বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষিকদের প্রযুক্তিগত বিভিন্ন সহযোগীতা করা হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ফসল উৎপাদন, লাভবান হচ্ছে কৃষক। বর্তমানে চরফ্যাশনে কৃষকদের ট্রাইকো-কমপোস্ট সার, কোকোডাস্ট ও মালচিং পেপারসহ বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত সহযোগীতা দিয়ে আসছে এফডিএ ও পিকেএসএফ। এর ফলে কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় কম হচ্ছে, ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পাশাপাশি ফসল ব্যবস্থাপনায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। তাই এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে দিন দিন কৃষকদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটির গঠন ও বুনট উন্নত করে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, পানির অপচয় রোধ করে। এ সার মাটির অম্লত্ব ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে ফসলের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়িয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। পাশাপাশি রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণে এর রয়েছে বিশেষ ভূমিকা।

এছাড়াও কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে সাফল্য পাচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। বীজ তলায় চারা উৎপাদন করতে গিয়ে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কেবল ৫০-৬০% চারা অঙ্কুরিত হয়, আবার সে চারা ক্ষেতে রোপন করলে অনেক চারা মারা যায়। কোকোডাস্টের মাধ্যমে উৎপন্ন চারার শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বলে জমিতে রোপন করার পর কোন চারা মারা যায় না। আবার এ চারায় রোগজীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং গাছ দ্রুত সুস্থ সবল হয়ে বাড়তে থাকে। এ চারা রোপন করলে ১৫-২০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। সরেজমিনে দেখা যায় শশিভূষণ ইউনিয়নে এক কৃষক কোডোকাস্ট পদ্ধতিতে এ মাসে প্রায় ৫০ হাজার শসা, মরিচ, ধুন্দুল, করলা, চিচিঙ্গার চারা উৎপাদন করেছেন। কৃষকরা তার নার্সারী হতে চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আশা করছেন, চারা বিশ দিনের মধ্য বিক্রি হয়ে যাবে। মাটির স্পর্শ ছাড়া চারা উৎপন্ন করা হয় বলে এসব চারায় মাটি বাহিত রোগ জীবানু হয় না।

কৃষকদের ফসল উন্নয়নে আরেক যুগোপযোগী প্রযুক্তি হলো মালচিং পেপার পদ্ধতি। মালচিং পেপারের মাধ্যমে সূর্যের আলো ও তাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে মাটিকে রাখে ফসলের জন্য আরও উপযোগী করে তোলে। এতে করে কৃষকের সেচ খরচের পাশাপাশি ফসল ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন খরচ প্রায় ৫০ শতাংশই কমে যায়। ফলে লাভবান হন কৃষকরা। আর এসব বিষয়ে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং স্থানীয় পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ)।

চরফ্যাশন উপজেলার কাশেমগঞ্জ গ্রামের কৃষক সোলেয়মান বলেন, পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) কৃষি কর্মকর্তা এর পরামর্শে ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করি। এটা জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফলন পাচ্ছি। ফলন ভালো হওয়ায় অন্য কৃষকেরাও এটি নিয়ে তাঁদের জমিতে ব্যবহার করছেন।

শশীভূষন ইউনিয়নের জুয়েল সিকদার জানান,
“কৃষককে ভালো মানের চারা উৎপন্ন করার জন্য পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আমার নার্সারী হতে বহু কৃষক চারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি কোডোকাস্টের মাধ্যমে চারা উৎপাদনে চারায় রোগ কম হচ্ছে।”

এ বিষয়ে পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, “প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে ও কৃষিজ ফলনের উন্নয়নে পরিবার উন্নয়ন সংস্থা’র (এফডিএ) প্রচেষ্টা সবসময়ই অব্যাহত রয়েছে। কৃষকদের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ায় অধিক ফলনের মাধ্যমে কৃষক লাভবান হয়। এ কারনেই দিন দিন কৃষকদের পিকেএসএফ ও এফডিএ এর প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, উন্নত ফলন এবং রোগমুক্ত চারা উৎপাদনে পরিবার উন্নয়ন সংস্থা কতৃক বাস্তবায়িত প্রযুক্তি অত্যন্ত ফলপ্রসূ। এর ফলে এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন এবং কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি এ সকল পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্যও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.