The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক ঈদ ভাবনা

প্রতিবছরের ন্যায় এবছরেও ঈদুল ফিতর চলে এসেছে আমাদের দোরগোড়ায়। সাথে নিয়ে এক অনাবিল আনন্দ। এ আনন্দ দোলা দিয়ে যায় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি বাঙালির মনে। ঈদের আনন্দে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে সবাই। তেমনি ফেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আবার অনেকের ফেরা হয়না। কিন্তু সবাইকেই অনন্য এক অনুভূতি দেয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের এই ঈদ অনুভুতিগুলো তুলে ধরেছেন জুনায়েদ মাসুদ

প্রিয়জনের সাথে ঈদের অশেষ আনন্দ

ঈদ মানে খুশি, আবার ঈদ মানে ফিরে আসা বা প্রত্যাবর্তিত হওয়া। পুরো বছর জুড়ে বহু প্রতিক্ষার পর বছর ঘুড়ে যখন পবিত্র ঈদ উল ফিতর আসে তখনই কাঙ্ক্ষিত সময় হয় প্রিয়জনের কাছে ফেরার। এবারের ঈদ উল ফিতর পড়েছে চৈত্রের তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে। চৈত্রের তাপপ্রবাহকে উপেক্ষা করে বৃষ্টিতে ভিজে রোদে পুড়ে ঘর্মাক্ত হয়ে ছুটে চলেন আপন গন্তব্যে। অপেক্ষায় থাকা প্রিয়জনদের সাথে উষ্ণ আলিঙ্গনে নিমিষেই ভুলে যায় পিছনে ফেলে আসা কয়েক ঘন্টার যুদ্ধক্ষেত্র। একেকজন তখন দিগ্বিজয়ের হাসিতে প্রফুল্ল। এই প্রফুল্লতার স্বাদ আস্বাদন করতেই মূলত মানুষ ঈদে নীড়ে ফিরে যায়। এই অনুভূতি মনের যতটা গহীন থেকে আসে, যতটা গহীনে শুধু প্রিয়জনের বাস, যতটা গহীন থেকে ভেসে আসে কিছু সম্মোহনী সুরে গাঁথা সুর।

মোঃ তরিকুল ইসলাম লিখন, শিক্ষার্থী, নাট্যকলা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ঈদ বাঙালি জাতির এক অনন্য উৎসব

বাঙালি এক উৎসবমুখর জাতি। আমাদের জীবন সদা সর্বদা উৎসবের আমেজে মেতে থাকে। এই প্রতিটা উৎসবই বাঙালির জাতির জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ জাগ্রত করে। তার মধ্যে ঈদুল ফিতর অন্যতম। এটি বাঙালিদের অন্যতম প্রাণের উৎসব।
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। বছরের আবর্তনে আসে ঈদুল ফিতর। এক মাসের সিয়াম সাধনার পর মুসলিম জীবনে এক অনাবিল আনন্দের মহাসম্মিলন ঘটে ঈদে। সকল ধর্মের মানুষ ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেয়। সবাই একই আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে। জাতি, ধর্ম, বর্ন, লিঙ্গভেদে সবাই মেতে প্রাণের উৎসবে। এতে করে বাঙালি জাতির ঐক্যের পরিচয় পাওয়া যায়। তখন মূর্ত হয়ে ওঠে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই বিখ্যাত চরণ, “মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান” এই উৎসবগুলোর মাধ্যমেই বাঙালি জাতির অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক।

মিতু রানী দাস, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ঈদ আনন্দে ঘরে ফেরা হোক নিরাপদ

দীর্ঘ এক বছর পর মাসজুড়ে সিয়াম সাধনার পর আবার ফিরে এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আকাশের এক কোনে বাকা চাঁদের আলোই ইদের জানান দিয়ে দেয়। সাথে সাথে পাড়া-মহল্লায় শুরু হয় ইদের আমেজ। ঘরে ঘরে বাজতে শুরু করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই অমর সংগীত “ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ইদ”।

ঈদের দিন নতুন জামা পড়া, ঈদগাহে নামাজ পড়া, কোলাকুলি করা এসব মুসলিম সম্প্রদায়ের এক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। আপনজনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ ঢাকা ছেড়ে যার যার আপন ঠিকানায় রওনা হয়। অনেক মানুষ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস,ট্রেন,লঞ্চে করে যাতায়াত করে। ফলে প্রায়ই ঘরে অনেক মর্মান্তিক হতাহতের ঘটনা। উৎসব মুখরিত বাড়ি থেকে পরিনত হয় শোকের সাগরে ভাসতে থাকা বাড়িতে। তাই আমাদের সকলের লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো আমরা নিরাপদে যার যার আপন ঠিকানায় পৌছাতে পারি। সকলকে জানাই ‘ঈদ মুবারক’।

মাইনুল ইসলাম অমি, শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল।

ঈদ আমার খুশির খোরাক

আনন্দ-খুশির সমার্থক শব্দ হলো ঈদ। ঈদ মানে পারিবারিক মিলন। ঈদ মানে পুরোনো বন্ধুদের খুজে পাওয়া। ঈদ মানে সকলে একসাথে অনেক আনন্দের সাথে ধর্মীয় দিন পালন করা।

তবে আমার কাছে ঈদ হলো আমার ছোট পরিবারের সাথে আনন্দের দিন। ঈদকে ঘিরে আমার অনেক আয়োজন। সবচেয়ে বড় আয়োজন হলে ঈদ কার্ড বানানো। সেগুলো বানিয়ে প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ করা। তাছাড়াও মায়ের সাথে ঈদের দিনের মেনু তৈরি করার বিষয়টা আলাদা একটা আনন্দ।

ঈদকে ঘিরে আরোও উৎসবপূর্ণ একটি সময় হলো চাঁদ রাত। তাড়াতাড়ি ইফতার শেষে চাঁদ দেখতে যাওয়ার মাঝে যে আনন্দ তা প্রকাশ্য নয়। আর চাঁদ দেখার পর চাঁদ রাতকে ঘিরে মেহেদী উৎসব মুসলিম মেয়েদের সবচেয়ে আনন্দের সময়। বাড়িতে তখন অনেক ভীড় থাকে। আমি সবাইকে মেহেদী দিয়ে দেই আর আমার বাবা সব বাচ্চাদের নিয়ে আনন্দ করেন।

ঈদের আগমন নিয়ে এই প্রস্তুতি মোটামুটি চলছে আমার। আশা করি ইদ খুব ভালো কাটবে।

নুছরাত জাহান, শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

ঈদুল ফিতরে যেন পাই প্রভুর রহমত

“ওমো রমজানে রই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” এটা কি শুধুই একটা গান? না, এটা লক্ষ্য কোটি প্রাণের আনন্দের অনুভূতি। দীর্ঘ এক মাস কত ত্যাগ‌ স্বীকার এর পর আসে এই খুশির দিনটি। ঘরে ঘরে কত আনন্দ আর কত হইচই। যারা জীবিকার তাগিদে নীড়ছাড়া তারাও যেন নতুন শিশুর মতো নীড়ে নিজেকে আবিষ্কার করে, বাবা-মায়ের কাছে তাদের সবথেকে কাছের মানুষটিও ফিরে আসে। সকাল সকাল নামাজে গিয়ে ঈদগাহতে হঠাৎ করে প্রিয় বন্ধু গুলার সাথে দেখা হওয়া আনন্দটাকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। সর্বপরি, এই মহিমান্বিত দিনে সৃষ্টিকর্তার প্রতি তার বান্দার কতই না আবেদন কতই না নিবেদন, সৃষ্টিকর্তাও যেন তার বান্দার এই আকুতি মিনতি যুক্ত আবেদন এর অপেক্ষায় থাকে আর ফলশ্রুতিতে সৃষ্টিকর্তা তার বান্দার প্রতি রহমত নাজিল করে। ঈদুল ফিতর কাটুক প্রভুর রহমতে।

মোঃ নীরব চৌধুরী, শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.