খুবি প্রতিনিধিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আবাসিক ছাত্রীহল বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে নানা সমস্যায় ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যান্টিন সমস্যা, অনিরাপদ খাবার পানি, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকটসহ নানা অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, চারটি আবাসিক হলে সেহরি ও ক্যান্টিনের ব্যবস্থা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে নেই ক্যান্টিনের ব্যবস্থা। ফলে রমজান মাসে শেষ রাতে সেহরিতে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই হলে নামে মাত্র রয়েছে ক্যান্টিন, সেখানে নেই শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থা। রমজান মাস ছাড়া সকালে শুধুমাত্র রুটি ও ডালভাজি বিক্রি করা হয়। তবে এখন রমজান মাসে শুধুমাত্র দুই-তিন ধরনের ইফতারি পাওয়া যায়, সেটিও প্রয়োজনের তুলনায় অল্প। কর্মী রয়েছে মাত্র একজন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগর রোডে গিয়ে ইফতারি কিনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, হলে ডাইনিং থাকলেও রাতের খাবার দেয়া হয় বিকেল চারটায় এবং সেহরির জন্য খাবার দেয়া হয় রাত আটটায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সেহরি পর্যন্ত সে খাবার সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। খাবার রেখে দিলে শেষ রাতে তা নষ্ট হয়ে যায়।
এছাড়াও ছয় তলা বিশিষ্ট দুটি সুউচ্চ ভবন থাকলেও রয়েছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকট। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীরা অভিযোগ জানালেও হয়নি সুরাহা। নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির সুব্যবস্থা, মাঝে মাঝেই পাওয়া যায় পোকা এবং ড্রেনের গন্ধ। এছাড়াও রয়েছে কুকুরের উপদ্রব। প্রায় প্রতিদিনই হলের ৫-৬ তলা পর্যন্ত কুকুর উঠে যায়। প্রায়ই কুকুর আতঙ্কে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা খাওয়ার। মিলের খাবারের মান কোন কিছু করেই খুব একটা ভালো হচ্ছে না। তার চেয়ে বড় সমস্যা ক্যান্টিন সিস্টেম না থাকা। এতে মিল দিতে না পারলে খাবার কিনতে দুই বেলা বাইরে যেতে হয়। আর রোজার সময় সমস্যা তো অনেক বেশি, একবেলার খাবার দেয় ৪টায় আর একবেলার ৮টায়। যারা রোজা রাখে তারা এই ৪টার খাবার দিয়ে কি করবে? আর যারা অন্য ধর্মাবলম্বী তারাও-বা ৪টার সময় খাবার দিয়ে কি করবে? আর রাত ৮টায় দেয়া খাবার ভোর রাত পর্যন্ত ভালো থাকে না। এভাবে রোজা রাখতে খুব কষ্ট হয়ে যায়। সম্পূর্ণ রোজা এভাবে গেলে অনেকই অসুস্থ হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সালমা বেগম বলেন, হলের মেয়েরা ক্যান্টিনে খাবার না খাওয়ায় ক্যান্টিন চলে না এবং আইটেম বাড়ানো যায় না। হলে যখন কাজ চলে তখন খোলা রাখতে হয়েছিল সে সময় হলের ভেতরে কুকুর ঢুকে পড়ে তবে পরে তাদের বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়েরা সেই কুকুরগুলোকে খাবার দেয়, খাবারের লোভে ভেতরে চলে আসে। কুকুর এর ব্যাপারে হলের কর্মচারীদের কড়াকড়ি নির্দেশনা দেয়া আছে। কর্মচারী সঙ্কট নিরসনের জন্য জন্য ইতোমধ্যে দুইজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, খুব শীঘ্রই তারা যোগদান করবে। আর পানিতে যে গন্ধ পাওয়া যায় এই গন্ধ দূর করার জন্য প্লাস্টিকের ট্যাংকির পরিবর্তে স্টিলের ট্যাংকি স্থাপন করা হবে।