কুবি প্রতিনিধি: শিক্ষকদের দাবি না মানায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
সোমবার (১৮ মার্চ) বেলা ৩টায় প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ড. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, শিক্ষক সমিতি গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখ গঠিত হয়। এরপর পাঁচবার লিখিতভাবে আমাদের দাবিগুলো প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ উপাচার্য মহোদয় জানান, তিনি নাকি আমাদের দাবি পড়ার সময় পাননি। আমরা দাবি আদায়ে ১৩ ও ১৪ মার্চ ক্লাস বর্জন করি এবং লিখিত দিই। তাও তিনি ভ্রূক্ষেপ করেনি। আজ আমরা আবারো যখন উপাচার্যের কার্যালয়ে দেখা করে বলি, স্যার আপনি চাইলে আমাদের সংকট এক ঘণ্টায় সমাধান হবে, আর না চাইলে তা সম্ভব না। তখন তিনি উত্তরে বলেন ‘আমি এ পরিস্থিতিকে কোন সংকট মনে করি না, তোমাদের যা ইচ্ছে করতে পারো। যদি কোর্টে যেতে চাও, যেতে পারো।’
তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষকদের কাজ কি কোর্টে কোর্টে দৌড়ানো। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা এসে তদন্ত করুন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে আপনাদের সাহায্য প্রার্থনা করছি। উপাচার্যের এমন অসহযোগিতামূলক আচরণ ও দাবি আদায়ে অনিচ্ছা থাকায় আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১৯ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত সকল ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতি যে দাবি গুলো দিয়ে ছিলাম আমরা মনে করেছি ভিসি আমাদেরকে ডাকবে। ওনি এসব নিয়ে আমাদের সাথে বসে নাই। আমাদের ছাত্রদের কাছ থেকে দূরে থাকতে কষ্ট লাগে তাই আমরা সদয় হয়ে ওনার কাছে গিয়েছি। আমরা চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সংকটে পড়ে ক্লাস না করে সেশন জট আটকে যাক। কিন্তু ভিসি এসবকে কোন সংকটই মনে করেন না। ওনি এতদিন আমরা যে চিঠির পর চিঠি দিয়েছি এসব দেখনি। এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে ওনি এসব সংকট সমাধান করতে চাচ্ছেন না।
ক্লাস বর্জনের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন বলেন, শিক্ষক সমিতি আমার কাছে একটা চিঠি দিয়েছিল। চিঠির বিষয়ে আমি তাদের সাথে কার্যালয়ে বসে কথা বলি। তাদের পক্ষ থেকে শুধু সভাপতি, সেক্রেটারি কথা বলবে। কিন্তু তারা সাইড টক শুরু করে দিয়েছিল। এক পর্যায়ে তারা বলেন আমরা এখানে কথা বলতে না পারলে এখানে কেন আসছি? পরে তারা চলে যায়।
তাদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, তাদের বলেছি আপনাদের দাবি আইনসম্মত হলে আমি মেনে নেব। ক্লাস বর্জনের বিষয়ের আমি তাদের রিকোয়েস্ট করেছি। আপনারা ক্লাস বর্জন করবেন না। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ও ১৪ মার্চ ৭ দফা দাবিয়ে ক্লাস বর্জন করেছিল শিক্ষক সমিতি।