চবি প্রতিনিধিঃ গত ১৫ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহনন দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে অবন্তিকা। তার আত্মহত্যার জন্য দায়ী তার সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর। দেশের সকল রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তার সাথে ঘটা অন্যায়গুলোকে তুলে ধরেন ও প্রশাসনসহ তার সহপাঠীকে অভিযুক্ত করেন। অনলাইন ও অফলাইনে যৌনহেনস্থার শিকার হয়ে প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে, তিনি প্রক্টরের দ্বারাও হেনস্তার শিকার হন।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়ার সঞ্চালনায় ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি রোনাল চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক জশদ জাকির ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এমদাদ উল্লাহ্।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “সারাদেশে শিক্ষার্থীদের অধিকারচর্চা ও অংশগ্রহণকে চূড়ান্তরূপে সংকুচিত করা হয়েছে। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচীতে ছাত্রলীগের হামলা, হলসমূহে দখলদারিত্ব, নিয়োগবাণিজ্য, অপক্ষমতা প্রদর্শনের এক নির্মম পরিণতি আত্মপ্রকাশ করেছে ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে৷ এটি একটি কাঠামোগত আত্মহত্যা।
তারা বলেন, যখন কেউ রাষ্ট্র ও প্রশাসন কর্তৃক আপনার ন্যায় ও সুবিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন, তখন আপনার সাথে হওয়া অন্যায়ের গ্লানি তাকে বাঁচতে দেয় না৷ ছাত্রলীগ দ্বারা আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা দেখি প্রশাসন কীভাবে অপরাধীদের বাঁচাতে তৎপর ছিলো। জাহাঙ্গীরনগরে যখন গৃহবধূ ছাত্রলীগ কর্মী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়, তখন প্রশাসন অপরাধীদের বাঁচাতে চায়। চবিতে ছাত্রী তার সাথে ঘটা হেনস্থার অভিযোগ করতে আসলে তার অভিযোগপত্র নেওয়া হয় না, তদুপরি হলে মেয়েদের প্রবেশের সময় বেঁধে দেওয়া হয়৷ অথচ, মতপ্রকাশ করাতে খাদিজার মতো শিক্ষার্থীরা নিপীড়নমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টের শিকার হয়। একইভাবে জাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রাফিতি আঁকার দায়ে ছাত্রলীগের কথায় প্রশাসন বহিষ্কার করে দুজন ছাত্রনেতাকে৷
আমরা বলতে চাই, এইসকল ঘটনার মধ্য দিয়ে যে প্রতিনিয়তই আমাদের যেতে হয়, এগুলো ফাইরুজের সাথে ঘটা কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের থেকে আলাদা কিছু নয়। বরং ফাইরুজের হত্যাকাণ্ড এইসব ঘটনারই চূড়ান্ত রূপ। এই খুনি কাঠামো থেকে আমরা কেউই বিচ্ছিন্ন নই। আমরা চবিসহ বাংলাদেশের সকল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সুবিচার ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানাই৷
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ নিজ সহকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর কর্তৃক হেনস্তার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে ফাইরুজ অবন্তিকা।