The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪

অভিযুক্তদের গ্রেফতারে জবি শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম, বিক্ষোভ সমাবেশ

জবি প্রতিনিধি: সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও করার হুমকিও দিয়েছেন তারা।

শনিবার দুপুর ৩টার পর পর অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় ছয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ সংলগ্ন ভিক্টোরিয়া পার্ক, লক্ষীবাজার ও রায়সাহেব বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে।

দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দফা দাবিতে আরও উল্লেখ করে বলেন, হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। আম্মানকে গ্রেফতারি পরোনা জারি করা এবং দ্বীন ইসলামকেও অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং সুষ্ঠু বিচারের আওতায় আনতে হবে। অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। ভিকটিম ব্লেমিং এবং ভিকটিমের পরিবারকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে। নারী নিপীড়ন সেল কার্যকর করতে হবে। আগামী বারো ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান বিক্ষোভকারীরা।

এদিকে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিভাগের রেজোয়ানুল হক বলেন, আজকের বিক্ষোভ থেকে আমরা ছয় দফা দাবি জানাচ্ছি। আমাদের প্রথম দাবি হলো, এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে, দ্বিতীয় দাবি অভিযুক্ত আম্মান ও দীন ইসলামকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে, তৃতীয় দাবি হলে জরুরি ভিত্তিতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে, চতুর্থ দাবি হলো ভিক্টিমের পরিবারের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে, পঞ্চম দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী সেলকে স্বাধীন করতে হবে এবং আমাদের সর্বশেষ দাবি হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।

নাট্যকলা বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সোমা সুমাইয়া বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ দফা দাবি না মানলে আমরা সোমবার ভিসি ভবন অবরোধ করবো।আমরা তদন্ত কমিটির ৫ জনের মধ্যে ২জনকে নিয়ে সন্ধিহান। এটার ন্যায্য বিচার চাই।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের রাফি আল মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে থেকে ছয়টি দাবী প্রসাশনের কাছে দেওয়া হয়েছে। যদি এই ছয়টি দাবী না মানা এবং সঠিক প্রয়োগ না হয় তাহলে আমরা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবো। এর সুষ্ঠু সমাধান ও তদন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশন না করে আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে। উপাচার্য মহাদয়ের কালকে কিছু আশ্বাস দিয়েছেন সেটা যেন আশ্বাসে সীমাবদ্ধ না থাকে সেটাও নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ রকম যেন আর ঘটনা না হয় সেটাও নিশ্চয়তা দিতে হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ইউভান বলেন, ফাইরুজ অবন্তিকা একজন শিক্ষার্থীই শুধু নয় তিনি অসাধারণ একজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

এদিকে শনিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর পূবালী চত্বরে বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মানববন্ধনে অংশ নেন বাংলা সংস্কৃতি বলয়, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরাম, রং-তুলি যুব ফাউন্ডেশন, আলো যুব মহিলা কল্যাণ সংস্থা, প্রত্যাবর্তন, তারুণ্যের বাংলাদেশ, নিরাপদ চালক চাই, দেশ কল্যাণ সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, ভিবিডি কুমিল্লা, নবাব ফয়জুন্নেসা ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা কলেজ থিয়েটার, ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার, ইয়ুথ ফর পারপাস, কুমিল্লা সাইক্লিস্ট ফোরাম, জুনিয়র ফ্রেন্ডার্স ক্লাবের প্রতিনিধিরা।

এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় অবন্তিকা গলায় রশি বেধে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। কুমিল্লা সদর হাসপাতালের রাত্রিকালীন দায়িত্বে থাকা ডাক্তার জুবায়ের তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তার গলায় একটি দাগ দেখতে পাই। সেই অবস্থায় তার দেহ নিথর অবস্থায় ছিল। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।

মৃত্যুর ১০ মিনিট পূর্বে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য আম্মান সিদ্দিকী নামে তার এক সহপাঠীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.